দক্ষিণ ভারতের বহু প্রাচীন খাদ্যসংস্কৃতির একটি বিশেষ দিক হল কলাপাতায় খাবার পরিবেশন ও খাওয়া। শুধু ঐতিহ্য নয়, এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানসম্মত স্বাস্থ্যগত উপকার এবং পরিবেশবান্ধব দিকও। বিশেষজ্ঞদের মতে, কলাপাতায় খাওয়ার অন্তত পাঁচটি বড় উপকারিতা রয়েছে। যা হল-
১. প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক গুণে ভরপুরঃ কলাপাতায় থাকে পলিফেনল নামের প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা জীবাণু ধ্বংসে সাহায্য করে। গরম খাবার পাতায় পরিবেশন করলে এর কিছু উপকারী উপাদান খাবারে মিশে গিয়ে স্বাস্থ্যের জন্য বাড়তি সুরক্ষা দেয়।
২. খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়ায়ঃ কলাপাতার উপরিভাগে থাকা প্রাকৃতিক মোমজাতীয় স্তর গরম খাবারের সংস্পর্শে এলে এক ধরনের সুন্দর ঘ্রাণ ছড়ায়, যা খাবারের স্বাদ ও আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়। দক্ষিণ ভারতের অনেক খাবারের স্বাদ আংশিকভাবে এই পাতার সুবাস থেকেই আসে।
আরও পড়ুনঃ লিভার একেবারে ঝাঁঝরা হয়ে যাবে! কোন কোন খাবারে বিপদ, পাতে রাখবেনই বা কী, জেনে নিন
৩. পরিবেশবান্ধব ও শূন্য বর্জ্যঃ কলাপাতা সম্পূর্ণ জৈব ও সহজে পচনশীল। এটি প্লাস্টিক বা কৃত্রিম প্লেটের মতো পরিবেশ দূষণ করে না। ধোওয়ার জন্য কোনও সাবান লাগে না, শুধু জলে ধুয়ে ফেললেই হয়, আর ব্যবহার শেষে মাটিতে পুঁতে দিলে তা দ্রুত সারে পরিণত হয়।
৪. রাসায়নিক দূষণ থেকে সুরক্ষাঃ অনেক কৃত্রিম বা ধাতব থালায় গরম খাবার পরিবেশন করলে ক্ষতিকর রাসায়নিক বার হতে পারে। কলাপাতা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। তাই এই ধরনের কোনও ঝুঁকি থাকে না।
৫. বাড়তি পুষ্টি যোগায়ঃ কলাপাতার পলিফেনল ছাড়াও ক্ষুদ্র উদ্ভিদজাত পুষ্টি উপাদান খাবারে মিশে যায়। যদিও এগুলো স্বাদ পরিবর্তন করে না, তবে স্বাস্থ্য উপকারিতা বাড়িয়ে তোলে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক পাতায় খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি ও হজমশক্তি উন্নত হয়। দক্ষিণ ভারতের অনেক অঞ্চলে আজও বিয়ে, পূজা বা বিশেষ উৎসবে কলাপাতায় খাবার পরিবেশনের রীতি রয়েছে।
