আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতে রুশ প্রেসিডেন্ট। দু'দেশের সম্পর্ক নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে সাম্প্রততিককালে বিস্তির চর্চা। স্বাভাবিকভাবেই এই সফরের দিকে নজর সব পক্ষের। ভারতে পদার্পণের আগেই, মস্কো থেকে যেন সেসব প্রশ্নের পালটা খোঁচা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ভারতে আসার ঠিক আগে, রাশিয়ায় বসেই, ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম 'ইন্ডিয়া টুডে'কে সাক্ষাৎকার দেন পুতিন। সেখানেই চরম খোঁচা ট্রাম্পকে!
ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন মুলুকের প্রেসিডেন্ট। সাম্প্রতিককালে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল অর্থাৎ জ্বালানি কেনা নিয়ে বিরাট আপত্তি তুলেছেন। এই ইস্যুকে সামনে রেখে ভারতীয় পণ্যের উপর বিরাট অঙ্কের শুল্কও চাপিয়েছেন। ট্রাম্পের দাবি ছিল, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেও ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি ক্রয়ের মাধ্যমে সাহায্য করছে রাশিয়াকে। তিনি ভারতকে রাশিয়া থেকে তেল কেনায় নিষেদও করেন। ভারত তা না মানায়, ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।
অথচ আমেরিকা নিজে কী করছে? পুতিন যেন ট্রাম্পের পরস্পরবিরোধী অবস্থানকেই তুলে ধরেছেন আমেরিকার কাণ্ড-কারখানা প্রকাশ করে। কী বলেছেন পুতিন? পুতিনের জ্বালানি ইস্যুতে সাফ মন্তব্য যদি আমেরিকা রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তাহলে ভারত তা পারবে না কেন? রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, আমেরিকা রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম ক্রয় অব্যাহত রেখেছে। রাশিয়ার মোট ইউরেনিয়াম রপ্তানির, ২৫ শতাংশ কেনে আমেরিকা। ওই ইউরেনিয়াম আমেরিকার পরমাণুকেন্দ্রগুলিতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভারতে আসার আগে, পুতিনের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার সন্ধে, ৬:৩৫ নাগাদ রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিন দিল্লিতে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে পালাম বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। রাশিয়ার রাষ্ট্রনেতা ভারতের বিমানবন্দরে নামতেই, করমর্দন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর, জড়িয়ে ধরলেন, মিত্র দেশের প্রেসিডেন্টকে। আমেরিকার ক্রমাগত হুঁশিয়ারি, শুল্ক-তোপের মাঝেই, এই দৃশ্য, এই মুহূর্ত রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। ইউক্রেন যুদ্ধের পর, প্রথমবার রুশ প্রেসিডেন্ট এই প্রথম ভারতে এলেন। ভূরাজনৈতিক মারপ্যাঁচের মাঝে, এই কারণেও পুতিনের ভারত-সফর তাৎপর্যপূর্ণ।
সফরের দ্বিতীয় দিনেও ঠাসা কর্মসূচি। শুক্রবার তার সফরের দ্বিতীয় দিনে, পুতিন রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অফ অনার এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য যাবেন। এরপর, অন্যান্য সফরকারী নেতাদের মতো তিনিও শ্রদ্ধা জানাতে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিস্তম্ভ রাজঘাটে যাবেন। দিনের শেষে, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং রাষ্ট্রপতি পুতিন ২৩তম ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের জন্য হায়দরাবাদ হাউসে মিলিত হবেন এবং প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং দক্ষ শ্রমের গতিশীলতার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা করবেন। এরপর চুক্তি এবং ভাগ করা এজেন্ডা সম্পর্কিত একটি যৌথ প্রেস বিবৃতি প্রকাশিত হবে দু'দেশের তরফে। সূত্রের খবর তেমনটাই। দু'দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর, পুতিন রাষ্ট্রপতির আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন।
