শরীরের জ্বালানি হল খাবার। দেহের প্রয়োজনীয় শক্তি এই খাবার থেকেই পাওয়া যায়। সঙ্গে মেলে পুষ্টি উপাদান। যা সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তাই আমরা প্রতিদিন কী খাই, কতটা খাই তা সুস্থতার জন্য খুবই জরুরি। তেমনই সারাদিনে কতবার এবং কতক্ষণ অন্তর খাই তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই সব কিছু ঠিক থাকলেই কাছে ঘেঁষবে না রোগভোগ।

শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খাদ্যতালিকায় সুষম খাবার যেমন জরুরি, তেমনই সঠিক সময়ে খেতে হবে সঠিক খাবার। মূলত যুগ যুগ ধরে তিন বেলা খাওয়ার নিয়ম মেনে এসেছেন বেশিরভাগ মানুষ। আধুনিক জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বলছে, এই অভ্যাস সবার জন্য এক রকম প্রয়োজনীয় নাও হতে পারে। তাই তো সময়ের সঙ্গে এই নিয়মে পরিবর্তন এসেছে। আজকাল কেউ চার বার অথবা পাঁচবার খাবার খান। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে দিনে অন্ততপক্ষে পাঁচ বার খাবার খাওয়া উচিত। নইলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। পিছু নিতে পারে একাধিক জটিল রোগব্যাধি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে ব্রেকফাস্টে ভারী খাবার খাওয়া উচিত। অনেকেই ব্রেকফাস্ট করার পর একবারে লাঞ্চ করেন। আর এই ভুলের জন্যই গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই সকালে জলখাবার খাওয়ার মোটামুটি ২ থেকে ২.৩০ ঘণ্টার মধ্যে খেতে হবে মিড মর্নিং ফুড। সেক্ষেত্রে একটা মরশুমি ফল খেলেই মিটবে শরীরে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি। 

আরও পড়ুনঃ শরীরে কি বাসা বেঁধেছে জটিল রোগ? বলে দিতে পারে জিভের ধরন! ৬ লক্ষণ না বুঝলেই চরম বিপদ

এরপর লাঞ্চ ও ডিনারের মাঝে ডায়েটে রাখতে হবে হালকা স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস। এতে রাতে খুব বেশি খিদে পাবে না। আর যে কোনও মিলেই কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে প্রোটিনের পরিমাণ যেন বেশি থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার-এই তিন খাবার খেলেই সুস্থ থাকা যায়। প্রয়োজনে ৪ বার খেতে পারেন।  গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা দিনে মাত্র এক বা দুই বেলা খাবার খান, তাঁদের শরীরের বিএমআই অনেক সময়ে কম থাকে। দীর্ঘ সময় না খাওয়া বা "ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং" অনেক ক্ষেত্রে ওজন কমানো, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ানো এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক হতে পারে।

আবার অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দিনে চার বা তার বেশি বার ছোট খাবার খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে, অতিরিক্ত ক্ষুধা কমাতে এবং এনার্জির মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা উচ্চ প্রোটিনযুক্ত ডায়েট অনুসরণ করেন, তাঁদের জন্য এই পদ্ধতি বেশ কার্যকর হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ মাত্র ৭ দিনে বন্ধ হবে চুল পড়া, গজাবে নতুন চুলও! নামী-দামি প্রোডাক্ট নয়, এই সব ঘরোয়া প্যাকই করবে কামাল

মূলত খিদে কখন পাচ্ছে তার উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অর্থাৎ খিদের সময় না খেলে যেমন অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন, তেমনই খিদে না থাকলেও অতিরিক্ত খেলে বাড়তে পারে ওজন। কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো ক্রনিক রোগও থাবা বসাতে পারে। একইসঙ্গে প্রত্যেকের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস থাকা উচিত।