আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রায় পাঁচ বছর একসঙ্গে থাকার পর বম্বে হাইকোর্টে ভারতের তারকা স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল ও ধনশ্রী ভার্মার বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয় ২০২৫ সালের ২০ মার্চ। বিচ্ছেদের দীর্ঘদিন অবশেষে নিজের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন চাহাল। জানালেন, কীভাবে বিচ্ছেদের পর ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। রাজ শামানির এক পডকাস্টে অংশ নিয়ে চাহাল বলেন, ‘আমি অ্যাংজাইটি অ্যাটাকে ভুগছিলাম, অবসাদে ছিলাম। এমনকি, আত্মহত্যার চিন্তাও এসেছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সম্পর্কে অনেক কিছু দেখে খুব খারাপ লাগছিল। ক্রিকেট থেকে বিরতি নিতে চেয়েছিলাম। শরীর কাঁপছিল, এসির মধ্যেও দরদর করে ঘেমেছি রাতের পর রাত’। তিনি আরও জানান, ২০২৪-২৫ সালের ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত বিজয় হাজারে ট্রফির সময় তিনি দলের কাছে বিরতি চেয়েছিলেন মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে।

চাহাল জানান, তাঁদের বৈবাহিক জীবনে প্রধান সমস্যা ছিল ‘মিল না থাকা’। তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক মানে হল সমঝোতা। একজন রেগে গেলে অন্যজনকে শুনতে হয়। কিন্তু অনেক সময় দুই মানুষের স্বভাব মেলে না। আমি ভারতীয় দলে খেলছিলাম, ও নিজের কাজে ব্যস্ত ছিল। দেখা-সাক্ষাৎও কম হত। এটা চলছিল গত এক-দুই বছর ধরে’। তিনি আরও জানান, তাঁরা সম্পর্ক শুরু করেছিলেন আলাদা প্রত্যাশা নিয়ে এবং পরে একে অপরের জন্য সময় দিতে না পারাই ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি করে দু’জনের মধ্যে। চাহাল জানান, ‘আমি কখনও প্রতারণা করিনি, কিন্তু আমাকে ‘চিটার’ বলা হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদের পর ধনশ্রী ভার্মার একটি মিউজিক ভিডিও ঘিরে শুরু হয়েছিল প্রবল বিতর্ক। ভিডিওতে পরোক্ষভাবে বিশ্বাসঘাতকতা ও গার্হস্থ্য হিংসার ইঙ্গিত থাকায় অনেকেই চাহালের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন।

আরও পড়ুন: ভারতীয় ফুটবল দলের নতুন কোচ হলেন খালিদ জামিল, ঘোষণা করে দিল এআইএফএফ

সোশ্যাল মিডিয়ায় একাংশ চাহালকে ‘চিটার’ বা প্রতারক বলে আক্রমণ করে। সেই প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে চাহাল বলেন, ‘আমি কখনও কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি। আমি এমন মানুষ নই। আমার মতো লয়্যাল খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমি সব সময় নিজের কাছের মানুষের কথা আগে ভাবি। কিন্তু যখন মানুষ কিছু না জেনেই দোষারোপ করতে থাকে, তখন নিজের মধ্যেই সংশয় তৈরি হয়’।

চাহাল আরও বলেন, ‘সেই সময় আমি এতটাই কাজের মধ্যে ছিলাম, সম্পর্ক নিয়ে ভাবার সময়ই পাইনি। প্রতিদিন যদি এমন হতে থাকে, তখন মনে হয়, ‘থাক, আর নয়। দু’জন মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারে। প্রত্যেকের নিজের জীবন আছে, নিজের লক্ষ্য আছে। একজন পার্টনার হিসেবে সেটাকে সমর্থন করতে হয়। যদি তুমি ১৮–২০ বছর ধরে নিজের কেরিয়ারের জন্য লড়ে যাও, শুধু একটা সম্পর্কের জন্য তো সেটা ছেড়ে দেওয়া যায় না। আমি আজ জীবনে যে জায়গায় পৌঁছেছি, সেটা অনেক কষ্ট করে পেরিয়ে এসেছি’। চাহালের বক্তব্যে একটা বিষয় স্পষ্ট, তিনি নিজের দিক থেকে সম্পর্কটিকে সম্মান দিয়েছেন, তবে জীবনের বাস্তবতা ও পেশাদার দায়িত্বের কারণে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল চাহাল এবং ধনশ্রীর মধ্যে। কিন্তু বিচ্ছেদের পরে তাঁকে নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে অনেকটা সময় লেগেছে ভারতের তারকা স্পিনারের।