নিতাই দে, আগরতলা: প্রতিদিন রাজ্যের কোনও না কোনও জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটে চলছে। বারবার সতর্ক করলেও, কোনও লাভ হচ্ছে না। উলটে ভয়াবহতা বাড়ছে দিনে দিনে। সড়ক সুরক্ষা সপ্তাহ পালন করলেও এবং ট্রাফিক দপ্তরের পক্ষ থেকে চেষ্টা করলেও সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাচ্ছে না। বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চলাচলের কারণে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে প্রত্যেক দিনই যান দুর্ঘটনা বেড়েই চলছে।
ফের ভয়াবহ দুর্ঘটনা গভীর রাতে। সময় বুধবার গভীর রাতে। ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের চিরাকুটি এলাকায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় কর্তব্যরত অবস্থায় এক পুলিশ কর্মী-সহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমারঘাটের দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি সাদা ইনোভা গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়িকে সজোরে ধাক্কা দেয়। তৎক্ষণাৎ স্থানীয়রা আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা চারজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন – স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী সাজাদ আলী, (চালক ও গাড়ির মালিক) আক্তার আলী, বনবীর শব্দকর এবং টিএসআর কর্মী মিলন দেববর্মা। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ সুপার-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ডিআইজি নর্দান রতি রঞ্জন দেবনাথ, কৈলাশহরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জয়ন্ত কর্মকার-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। ডিআইজি রতি রঞ্জন দেবনাথ সাংবাদিকদের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, অতিরিক্ত গতির কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের গাড়িটি কর্তব্যরত অবস্থায় হঠাৎ রাস্তায় অকেজো হয়ে যায়। মাঝরাস্তায় পরিস্থিতি বুঝে গাড়ির চালক গাড়িটি সারানোর ব্যবস্থা করছিলেন। তখন হঠাতই টি আর ০২ এম ০৫৯৯ নম্বরের সাদা রংয়ের ইনোভা গাড়িটি পুলিশের গাড়িটিকে সজোরে ধাক্কা মেরে রাস্তার ডিভাইডারের সঙ্গে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে ড্রেনে পড়ে যায়। দুর্ঘটনা এতটাই ভয়াবহ ছিল, ইনোভা গাড়িটির চালকের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।‘ গাড়িতে থাকা আরও দু’ জন-সহ কর্তব্যরত টিএস আর জোয়ান ও পুলিশের গাড়িটির ড্রাইভার আহত হন।
সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে কৈলাসহ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসারত অবস্থায় টিএসআর কর্মী-সহ ইনোভা গাড়িতে থাকা দু’ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। পুলিশের গাড়ির চালক অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় তাঁকে আগরতলা জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে পুলিশের গাড়ির চালকের চিকিৎসা চলছে জিবি হাসপাতালে এবং তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন ডিআইজি। বৃহস্পতিবার দুপুরে চারজনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কীভাবে এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে, সূত্রের খবর তেমনটাই।
