অফিসে কাজের মাঝে আচমকাই মাথাটা দপদপ করতে শুরু করল। খানিকক্ষণের মধ্যে মাথার এক পাশে প্রবল যন্ত্রণা। অগত্যা ল্যাপটপ বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হলেন। ছুটির দিনে সবে কাজ সেরে সকলের সঙ্গে গল্প করতে বসেছেন। হঠাৎ শুরু হল মাথার তীব্র যন্ত্রণা। আড্ডা ছেড়ে বিশ্রাম না নিয়ে আর উপায় রইল না। শুধু মাথার যন্ত্রণা নয়, সঙ্গে গা গোলানো, কখনও কখনও হয় জ্বরও। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা যে কোনও সময়ে এভাবেই মাইগ্রেনের যন্ত্রণা ভোগেন অনেকে। মাইগ্রেনের সমস্যায় শুধু ওষুধ নয়, খাদ্যতালিকা থেকে কয়েকটি খাবার বাদ দিলে স্বস্তি পেতে পারেন। জেনে নেওয়া সেই বিষয়ে-
*কফিঃ মাথা ব্যথা হলেই অনেকে কফি খেয়ে নেন। আর এই ভুলটা করেন বলেই সমস্যা বাড়ে। কফি খেলে মাইগ্রেনজনিত সমস্যা ট্রিগার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আসলে কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন। আর এই উপাদান মাইগ্রেন ট্রিগার করার কাজে একাই একশো। তবে যাদের নিয়মিত কফি খাওয়ার অভ্যাস তাঁরা একবারে খাওয়া বন্ধ করবেন না। ধীরে ধীরে অভ্যাস বদলান। কারণ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে যেমন মাইগ্রেন হতে পারে, তবে হঠাৎ করে ক্যাফেইন বন্ধ করে দিলেও মাইগ্রেন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আরও পড়ুনঃ বর্ষাকালে বাড়ে সাপের উপদ্রব! ভুলেও করবেন না এই সব কাজ, ফাঁকফোকর দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়বে সাপ
*বাজারচলতি পানীয়ঃ শুধু কফি নয়, পাশাপাশি স্পোর্টস ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস, এনার্জি বারেও ক্যাফিন থাকে। এগুলিও এড়িয়ে চলুন। ক্লান্তি কাটানোর জন্য অনেকেই এনার্জি ড্রিঙ্ক বা বার খান। এই ধরনের পানীয়তে ও খাবারে অতিরিক্ত মিষ্টি থাকে। খুব সহজেই এনার্জি বাড়িয়ে বাড়িয়ে দিলেও বেশি মাত্রায় এই পানীয় খেলে মাইগ্রেনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
*অ্যালকোহলঃ মাইগ্রেনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর অ্যালকোহল। এতে রয়েছে থিয়ামিন ও টাইরামিন নামক দুটি উপাদান। আর এই দুই উপাদান মাথা যন্ত্রণার কারণ হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অ্যালকোহল থেকে মুখ, গলা, খাদ্যনালী, লিভার, স্তন এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই নিয়মিত মদ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সতর্ক থাকুন।

*প্রসেসড খাবার- যে কোনও প্রসেসড খাবারে অতিরিক্ত নুন ও চিনি দেওয়া থাকে। দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য মেশানো থাকে নানা ধরনের রাসায়নিকও, যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভাল নয়। মাইগ্রেন সহ বিভিন্ন জটিল রোগ উস্কে দিতে পারে এই সব খাবার। হট ডগ, বেকন, সসেজের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারে সাধারণত সংরক্ষণ বা স্বাদ বাড়ানোর জন্য নাইট্রেট এবং নাইট্রাইটের মতো রাসায়নিক যুক্ত করা হয়। এই রাসায়নিকগুলি মাইগ্রেন ছাড়াও পাকস্থলী এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
*ডিপ ফ্রায়েড খাবার- ভাজা খাবার বিশেষ করে ডিপ ফ্রায়েড খাবার উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা হয়। এই ধরনের খাবারের মধ্যে কার্সিনোজেনিক উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত ভাজা খাবার খেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একইসঙ্গে মাইগ্রেনে ভুক্তভোগীরা চিনি আছে, এমন খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে মাইগ্রেনের ব্যথাও বাড়তে পারে।
