আজকাল ওয়েবডেস্ক: সমুদ্রের ধারে গিয়ে অনেকেই খালি পায়ে জলে হাঁটতে পছন্দ করেন। তবে এবার তাদের কাছে একটি খারাপ খবর। জলের নিচে রয়েছে এমন ব্যাকটেরিয়া যারা পা দিয়ে সরাসরি দেহে প্রবেশ করছে। তারা দেহে প্রবেশ করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না। সেখান থেকে তারা দেহের মাংস খাওয়া শুরু করেছে। সেখান থেকেই বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি ফ্লোরি়ডাতে এমন ব্যাকটেরিয়ার শিকার হয়েছেন চারজন। তারা সকলেই মারা গিয়েছেন। সেখানকার স্বাস্থ্য দপ্তর বিষয়টি সকলেই জানিয়েছেন। চলতি বছরে এই ধরণের ব্যাকটেরিয়ার শিকার হয়েছেন প্রায় ১১ জন। এই ধরণের ব্যাকটেরিয়ার নাম হল ভিবরো ব্যাকটেরিয়া। এদেরকে পাওয়া যায় সমুদ্রের জলে। আমেরিকার ব্যাকটেরিয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন একে খালি চোখে দেখা যাবে না। তবে জলের নিচে এরা ঘাপটি মেরে থাকে। সেখান থেকে যারা জলে সাঁতার কাটেন বা সেখানে নেমে হাঁটতে পছন্দ করেন তারা এর প্রধান শিকার।
এই ধরণের ইনফেকশন একেবারে বিরল। এটি দেহে প্রবেশের পরই আপনি অসুস্থ বোধ করতে থাকবেন। সেখানে আপনার বমি, ডায়রিয়া, পেটে ব্যাথা, চামড়াতে নানা ধরণের লাল দাগ তৈরি হবে। এরপর ধীরে ধীরে দেহ দুর্বল হতে শুরু করবে। সেখান থেকে দেহের ক্ষমতা কমতে শুরু করবে। যদি দ্রুত আপনি চিকিৎকের কাছে না যান তাহলে সেখান থেকে আপনার লিভার ক্ষতি হতে পারে। এমনকি বেশি দেরি হলে আপনার হার্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এই ধরণের ব্যাকটেরিয়াতে তাই গবেষকরা মাংস খেকো ব্যাকটেরিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। একে জলের নিচে পাওয়া গিয়েছে। ফলে জল থেকে একে সরানো যাবে না। তাই সকলকেই সমুদ্রে নামার আগে সতর্ক হয়েই থাকতে হবে।
এর আগেও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে বিরল ‘মাংসখেকো’ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। একাধিক হারিকেনের প্রভাবে এই ব্যাকটেরিয়ার ব্যাপক সংক্রমণ ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফ্লোরিডা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়াটির নাম ‘ভিব্রিও ভালনিফিকাস’। এই ব্যাকটেরিয়ায় ৭৪ জনের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে গত বছর এই ব্যাকটেরিয়ায় ৪৬ জন সংক্রমিত হয় এবং ১১ জনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, ‘ভিব্রিও ভালনিফিকাস’ উষ্ণ ও সমুদ্রের নোনা জলে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ব্যাকটেরিয়া। এটি বেঁচে থাকার জন্য লবণের প্রয়োজন।
এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনে মৃত্যুর জন্য কর্তৃপক্ষ হারিকেন ‘হেলেন’কে দায়ী করেছে। তীব্র বাতাস ও উঁচু ঢেউ নিয়ে ফ্লোরিডায় আঘাত হানে এই ঘূর্ণিঝড়টি। হেলেনের তাণ্ডবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
আরও পডুন: ‘সবার আগে পরিবার’, মহাকাশে মহাকাব্য লেখার পর শুভাংশুর নতুন অনুভূতি
ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ভিব্রিও’ ব্যাকটেরিয়াগুলো সাধারণত উষ্ণ উপকূলীয় জলে পাওয়া যায়। খাবার বা জলের সঙ্গে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাকিস্থলিতে গেলে কিংবা শরীরের ক্ষতস্থান দূষিত জলের সংস্পর্শে এলে মানুষ অসুস্থ হতে পারে।
কর্তৃপক্ষের মতে, ভারি বৃষ্টিপাত এবং বন্যার পরে বিশেষ করে নোনা জলে এই ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। ‘ভিব্রিও ভালনিফিকাস’র সংক্রমণে ত্বক ও নরম টিস্যু ভেঙে যেতে পারে। অনেক সময় এর বিস্তার রোধ করার জন্য, সংক্রামিত অঙ্গ কেটে ফেলতেও হতে পারে। তবে এবরাই প্রথম নয়, এর আগেও ফ্লোরিডায় ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটেছে। ২০২২ সালে এই মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ায় ৭৪ জন সংক্রমিত হন এবং ১৭ জনের মৃত্যু হয়।
