আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহাকাশে মহাকাব্য লিখে ফেলেছেন তিনি। তবে এবার নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পালা। মহাকাশ থেকে ফিরে এবার নিজের পরিবারের সঙ্গে সুখের সাগরে ভাসলেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। তার স্ত্রী কাম্মা শুক্লা এবং ছবছরের ছেলে কিয়াস শুক্লাকে বুকে জড়িয়ে ধরে সমগ্র নেটমাধ্যমকে অন্য অনুভূতি এনে দিলেন শুভাংশু শুক্লা।
শুভাংশুর পরিবার থাকে টেক্সাসে। সেখানে তিনি নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন প্রায় ২ মাস পর। নিজের ইন্টাগ্রামে লিখলেন, এটা ছিল চ্যালেঞ্জের। পৃথিবীতে ফিরে নিজের পরিবারকে জড়িয়ে ধরে একেবারে ঘরোনা অনুভূতি হয়েছে। মহাকাশ যাত্রা কোনও ম্যাজিকের মতো। তবে সবচেয়ে বড় ম্যাজিক লুকিয়ে রয়েছে মানুষের মধ্যেই।
কাম্মা শুক্লা জানালেন শুভাংশু মহাকাশ থেকে ভালভাবে ফিরেছেন। তারা সেই প্রার্থনা করছিলেন। এবার পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে তিনি দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নিন এটাই তারা চান। তার এই সফর যে সফল হয়েছে তাতে তারা আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন, শুভাংশুর সঙ্গে তারা এখন টানা থাকবেন। বহুদিন পর তার ছেলে বাবাকে পেয়েছে। ফলে সেখান থেকে তারা আর কোথাও যাবেন না। এতদিন ধরে যে প্রতীক্ষা তারা করছিলেন সেটা সফল হয়েছে।
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" target="_blank" rel="noopener">A post shared by Shubhanshu Shukla (@gagan.shux)
মহাকাশ থেকে সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরেছেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। মঙ্গলবার প্রশান্ত মহাসাগরে তিনি মহাকাশ থেকে ফিরেছেন। দুপুর ৩ টের পর মহাকাশ থেকে সাগর জলে ডুব দেন শুভাংশু। গোটা বিষয়টি দেখভাল করেছে নাসা।
১৮ দিন ধরে মহাকাশে থাকার পর ভারতীয় মহাকাশচারীকে নিয়ে এখন সকলের আগ্রহ তুঙ্গে। তবে কবে তিনি আসবেন ভারতের মাটিতে। এবিষয়ে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। তিনি জানিয়েছেন ভারতে শুভাংশু শুক্লা আসবে ১৭ আগস্ট। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নাসা তার খেয়াল রাখছে। তবে ভারতে দ্রুত আসবেন শুভাংশু শুক্লা। নিজের দেশে এসে তিনি ইসরোর কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। ভারতের পরবর্তী মহাকাশ যাত্রার সঙ্গে শুভাংশু যুক্ত থাকতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
২৬ জুন ইতিহাস তৈরি করেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু শুক্লা। অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের অংশ হিসাবে অন্য তিন মহাকাশচারীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পৌঁছান শুভাংশু। তারপর গত কয়েকদিন ধরে মহাকাশ থেকে একাধিক বিষয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। নির্দিষ্ট মিশন শেষে এরপর শুরু হয় ঘরে ফেরার প্রস্তুতি। ১৪ জুলাই ভারতীয় সময়ানুসারে ৪টে ৩৫ মিনিটে ড্রাগন স্টেশন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর প্রায় ২২ ঘণ্টার দীর্ঘ সফর শেষে পৃথিবীতে ফিরলেন তাঁরা।
শুভাংশুর এই যাত্রা ঐতিহাসিক বলেই মনে করা হচ্ছে। ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মা প্রথম ভারতীয় হিসেবে মহাকাশ গিয়েছিলেন। তাঁর কীর্তিকে এবার স্পর্শ করলেন শুভাংশু। সময়ের হিসেবে রাকেশের থেকে অনেকটা বেশি সময় তিনি থাকলেন অন্তরীক্ষে। পাশাপাশি তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গেলেন।
সেখানে পৌঁছনোর পরে শুভাংশুর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল পৃথিবীকে দেখতে কেমন লাগছে? এই প্রসঙ্গে শুক্লার জবাব, “পৃথিবীকে এমন স্থান থেকে দেখার সুযোগ পাওয়াটা একটা সৌভাগ্যের বিষয়। যাত্রাটা অসাধারণ ছিল। অসাধারণ! মহাকাশে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু যে মুহূর্তে আমি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলাম, এই ক্রু সদস্যরা আমাকে এমন স্বাগত জানাল! তোমরা আক্ষরিক অর্থেই আমাদের জন্য তোমাদের ঘরের দরজা খুলে দিলে।”
এই যাত্রা সহজ ছিল না। প্রথমে তাদের যান টেক অফ করতে পারেনি। ফলে সেখানে খানিকটা হলেও পিছিয়ে যায় তাদের মহাকাশযাত্রা। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই মহাকাশে যাত্রা করে তারা। এরপর টানা এতগুলি দিন ধরে তারা মহাকাশে ছিলেন। সেখানকার অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার ভারতের মাটিতে পা দেবেন শুভাংশু। তার এই অভিজ্ঞতা ভারতের মহাকাশবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অনেকটা সহায়ক হবে বলেই মনে করছেন অনেকে।