আজকাল ওয়েবডেস্ক: আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল আওয়ামী লীগকে। নির্বাচনের সময় সেটিই বহাল থাকবে। বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না 'নিষিদ্ধ' আওয়ামী লীগ। 

 

সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না। বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

 

গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে শফিকুল আলম বলেন, 'আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ রয়েছে দেশে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে দলটির কার্যক্রম বাতিল করেছে। ফলে আওয়ামী লীগের দল হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।' 

 

ইউনুস সরকারের পদক্ষেপের পরেই আন্তর্তাতিক স্তর থেকে চাপ পড়তে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা করার জন্য আবেদন করা হয়েছে ইউনুস সরকারকে। মহম্মদ ইউনুসকে সম্প্রতি চিঠি লেখেন পাঁচজন মার্কিন সংসদ সদস্য। তাঁরাই জানান, আওয়ামী লীগের ওপর থেকে যাতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। 

 

চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে গ্রেগরি মিকস (ব়্যাঙ্কিং সদস্য, হাউজ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি), বিল হুইজেঙ্গা (দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া সংক্রান্ত সাবকমিটির চেয়ারম্যান), সিডি কামলেজর-ডাভ (দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া সংক্রান্ত সাবকমিটির ব়্যাঙ্কিং সদস্য), কংগ্রেস সদস্য জুলি জনসন এবং থমাস সুজির। তাঁদের বক্তব্য, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশের নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলকেই অংশ নিতে দেওয়া উচিত। 

 

প্রসঙ্গত, ভারত বিরোধী বক্তব্যের জন্য পরিচিত, বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব, ৩২ বছর বয়সি হাদি ২০২৪ সালের ছাত্র অভ্যুত্থানের সময় খ্যাতি লাভ করেন। চলতি মাসের শুরুতে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের গুলিতে হাদি আহত হন। গত সপ্তাহে সেই আঘাতের কারণে সিঙ্গাপুরে মারা যান তিনি। গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম ফ্রন্টলাইনার শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন উত্তাল রয়েছে বাংলাদেশ। 

 

বুধবার হাদির ভাই শরিফ ওমর হাদি জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হিসেবে হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। ওমর হাদি অভিযোগ করেছেন, সরকারের ভেতরের একটি ‘স্বার্থান্বেষী মহল’ পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওমর হাদি বলেন, “আপনারাই ওসমান হাদিকে হত্যা করেছেন, আর এখন এই ঘটনাকে ইস্যু বানিয়ে নির্বাচন ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছেন।” তিনি জানান, তাঁর ভাই চেয়েছিলেন ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তবে সেই পথ বানচাল করা হয়েছে। 

 

ওমর হাদি আরও বলেন, “খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনুন, যাতে নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কিন্তু সরকার এখনও পর্যন্ত আমাদের সামনে কোনও সদর্থক কাজ দেখাতে পারেনি।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ওসমান হাদির বিচার না হয়, তবে একদিন আপনাদেরও বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হতে হবে।”