আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৪ সালে পৃথিবীর মানুষ ৪৮৫ বিলিয়ন প্লাস্টিক দূষণকে পরিবেশে ছেড়েছে। এই সংখ্যা আগামীদিনে আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রতিদিন ধরে বেড়ে চলা এই দূষণের মোকাবিলা কীভাবে করা হবে তা নিয়ে সকলেই এখন চিন্তিত। তবে এখানেই নতুন দিকের কথা ভাবছেন গবেষকরা।


হস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদ রহমান এবিষয়ে একটি চিন্তাভাবনা করেছে। তিনি রাইস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে মিলে একটি কাজ করার চেষ্টা করছেন। সেখান থেকে তার প্রধান ভাবনা হল কীভাবে এই টন টন প্লাস্টিকের ব্যবহারকে ফের নষ্ট করা যায়। তাদের হাতে একটি বায়োপলিমার এসেছে। এটি একেবারে ছোটো একটি ব্যাকটেরিয়ার মতো। খালি চোখে একে দেখা যাবে না। তবে যদি অনুবীক্ষণের সামনে একে ফেলা যায় তাহলে একে দেখা যাবে। 


এই ব্যাকটেরিয়ার প্রধান খাদ্য হল প্লাস্টিক। এরা প্রতিটি সময় প্লাস্টিক খেতে পছন্দ করে। ফলে সেখান থেকে এদের হাত ধরেই এই টন টন প্লাস্টিক দূষণ আটকানোর চাবি রয়েছে। তবে শুধু দরকার হবে একে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের প্লাস্টিক দূষণকে রোধ করা। তাহলে এই দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবেন সকলে।


রহমান জানিয়েছেন, পরিবেশকে নষ্ট করার পিছনে প্লাস্টিকের একটি বড় হাত রয়েছে। সেখান থেকে দেখতে হলে যদি এই ব্যাকটেরিয়াকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় তাহলে এই দূষণের হাত থেকে চিরতরে মুক্তি মিলবে। পরিবেশকে তার আগের জায়গাতে ফিরিয়ে দিলেই সেখান থেকে দূষণের মাত্রা কমবে।


প্লাস্টিক রোধ করতে হলে সকলকেই সচেতন করতে হবে। এই ব্যাকটেরিয়াকে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে সেই দিকটিও অতি সঠিকভাবে দেখে নিতে হবে। তাহলেই সেখান থেকে প্লাস্টিকের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা যাবে।


প্লাস্টিক দূষণ হল পরিবেশে প্লাস্টিক বর্জ্যের আধিক্য, যা মানুষ, বন্যপ্রাণী এবং প্রকৃতির উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এটি বোতল, ব্যাগ, মোড়ক সহ বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে হতে পারে। এটি মাটি, জল এবং বাতাসকে দূষিত করে এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য সমস্যা তৈরি করে।
প্লাস্টিক দূষণের প্রধান কারণ হল প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব। বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যেমন - জলের বোতল, পলিব্যাগ, এবং খাবারের প্যাকেজিংয়ের কারণে এই সমস্যা আরও বাড়ছে। 


প্লাস্টিক দূষণের ফলে মাটি, জল এবং বাতাস দূষিত হয়। বন্যপ্রাণী, বিশেষ করে সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিক গ্রহণ করে বা এতে আটকে গিয়ে মারা যায়। এছাড়া, প্লাস্টিক থেকে নির্গত ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

আরও পডুন:  ‘হ্যালো’ বলার দিন শেষ, কোন শব্দটি ব্যবহার করছে ‘জেন জি’, জানলে অবাক হবেন


পুনঃব্যবহারযোগ্য পণ্যের ব্যবহার: একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পরিবর্তে, যেমন - জলের বোতল, শপিং ব্যাগ, কফি কাপ, ইত্যাদি পুনঃব্যবহারযোগ্য পণ্য ব্যবহার করা উচিত। 
সচেতনতা বৃদ্ধি: প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা প্রয়োজন। 
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যেমন - রিসাইক্লিং এবং বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন, এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস: প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং পরিবেশ-বান্ধব বিকল্পের ব্যবহার বাড়ানো দরকার। 
আইন ও নীতি: প্লাস্টিক দূষণ রোধে কার্যকর আইন ও নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা উচিত।