আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছোট্ট কুঁড়ে ঘর। তাতেই দিনরাত কাজ করতেন মালিক ও কর্মীরা। সেখানেই সম্প্রতি তাঁদের কানে ভেসে আছে ফোঁস ফোঁস শব্দ। কয়েকবার শব্দটি হয়েই আবার থেমে যেত। ঘটনাটি একদিন ঘটেনি। প্রায়ই প্রতিদিন সেই ফোঁস ফোঁস শব্দ সকলের কানে পৌঁছত। সেটি ভেসে আসত ঘরের একটি নির্দিষ্ট কোণ থেকে। 

 

সকলেই অনুমান করেছিলেন, ঘরের ওই কোণে হয়তো সাপ আছে। সেটি কী সাপ, আদৌ বিষধর কিনা, তা অনুমান করতে পারেননি। কাজের ব্যাঘাত ঘটায়, সাপ ধরায় পারদর্শী এক যুবককে ডেকে আনা হয়। সেই কুঁড়ে ঘরের কোণা থেকে একে একে একাধিক সাপ উদ্ধার করেন তিনি। 

 

তবে এটি, কোনও সাধারণ সাপ। এক একটি জ্যান্ত কোবরা। যা অত্যন্ত বিষধর। এক ছোবলেই মানুষ মারার ক্ষমতা থাকে যার। একদিনে যতগুলি কোবরা তিনি ওই ঘরটি থেকে উদ্ধার করেছেন, তার সংখ্যা শুনেই শিউরে উঠেছেন অনেকেই। বন দপ্তরের আধিকারিকদের মতে, এটি অন্যতম বিরল ঘটনা। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের মান্দসৌরে। জানা গেছে, মান্দসৌর জেলার সাবাখেদা জেলায় একটি কুঁড়ে ঘরে থেকে ৬০টি কোবরা উদ্ধার করা হয়েছে। সবগুলি কোবরাই ফণা তুলেছিল। মাটি খুঁড়ে একে একে ৬০টি কোবরা উদ্ধার করেছেন এক যুবক। ওই ঘরটির আশেপাশে আরও এক ডজন কোবরা লুকিয়ে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। 

আরও পড়ুন: প্রেমে ছ্যাঁকা! প্রাক্তন প্রেমিকাকে ভুলতে পাহাড়ে হারালেন যুবক, যা পরিণতি হল

ওই ঘরের মালিক রাহুল দয়ামা নামের এক যুবক জানিয়েছেন, কাজ করার মাঝেই ফোঁস ফোঁস শব্দ তাঁদের কানে ভেসে আসত। প্রথমে কেউই বিশেষ গুরুত্ব দেননি। কিন্তু একাধিক সাপের উপস্থিতি টের পেতেই দুর্গেশ পাতিদার নামের এক যুবককে ডেকে আনেন। তিনি সাপ ধরায় পারদর্শী। 

রাহুল জানিয়েছেন, দুর্গেশকে ডাকার আগে ঘরের ওই কোণে গিয়ে তিনি খোঁজাখুঁজি করেন। তিনটি কোবরাকে ফণা তোলা অবস্থায় দেখতে পান। তখনই দ্রুত দুর্গেশকে ঢেকে আনেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্গেশ প্রথমে পাঁচটি কোবরা উদ্ধার করেছিলেন। এরপর গর্তে খানিকটা জল ঢেলে দেন। একে একে ওই গর্ত থেকে একাধিক কোবরা বেরিয়ে আসে‌। 

 

দুর্গেশ জানিয়েছেন, তিনি একাধিকবার গ্রামে, শহরে সাপ ধরেছেন। কিন্তু এরকম অভিজ্ঞতা এর আগে তাঁর কখনও হয়নি। ওই গর্ত থেকে ৬০টি ফণা তোলা কোবরা উদ্ধার করেছেন। আরও এক ডজন কোবরা ওই এলাকায় থাকতে পারে। কোবরাগুলি উদ্ধার করে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। 

 

মান্দসৌরের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার সঞ্জয় রাইখেরে জানিয়েছেন, 'ঘটনাটি অত্যন্ত বিরল। সাধারণত এক একটি জায়গায় দু'-তিনটি কোবরা দেখতে পাওয়া যায়। একসঙ্গে ৬০টি কোবরা উদ্ধারের ঘটনাটি এর আগে দেখা যায়নি‌। ওই এলাকায় সম্ভবত আরও বিষধর সাপ লুকিয়ে রয়েছে। কোবরার অতি দ্রুত বংশ বিস্তার হয়‌।‌ একটি কোবরা কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০টি ডিম পাড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সর্তক করা হয়েছে। কোনও সন্দেহ হলেই বন দপ্তরকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৬০টি কোবরা উদ্ধারের পর অদূরের একটি জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।' এদিকে ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। আতঙ্কে রীতিমতো গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।