সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বহু প্রতীক্ষিত জেমস গান পরিচালিত ‘সুপারম্যান’ অবশেষে মুক্তি পেয়েছে ১১ জুলাই, শুক্রবার। গোটা বিশ্ব যখন নতুন ক্লার্ক কেন্টকে স্বাগত জানাচ্ছে, তখন ভারতের প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের অভিজ্ঞতা ঠিক ততটা মন ভোলানো হল না। কারণ? ভারতীয় সেন্সর বোর্ড (Central Board of Film Certification) আবারও তাদের ‘নীতি পুলিশি’ সত্তা জাহির করে কাঁচি চালাল ছবির একাধিক দৃশ্যে।

এইমুহূর্তে সেন্সর বোর্ডের সবচেয়ে বিতর্কিত নীতি পুলিশি? ‘সুপারম্যান’ ছবিতে ডেভিড কোরেনসেট ও র্যা চেল ব্রোসনাহানের একটানা ৩৩ সেকেন্ডের চুমুর দৃশ্য স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে! শুধু এখানেই থেমে থাকেনি সেন্সর বোর্ড। দুটি আলাদা দৃশ্যে ছড়িয়ে থাকা সেই ‘ঘনিষ্ঠতা’র মুহূর্তও পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয় সেন্সর বোর্ডের নির্দেশে!সিনেমার সংলাপ থেকে শুরু করে তাঁদের মতে, একাধিক ‘অশোভন অঙ্গিভঙ্গি ’ সমস্ত কিছুই ছাঁটাই করা হয়েছে—যার ফলে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে ছবির পুরো আবহ! এই কাটাকুটির পর তবেই ছবিটি এখন পেয়েছে U/A 13+ সার্টিফিকেট, আর মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড।

এবার এই ‘অযৌক্তিক’ কাঁচির প্রতিবাদে মুখ খুললেন অভিনেত্রী শ্রেয়া ধন্বন্তরী। ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ ও ‘স্ক্যাম ১৯৯২’ খ্যাত এই অভিনেত্রী শ্রেয়া ধন্বন্তরী। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক স্ক্রিনশট শেয়ার করে তিনি লিখলেন - “এগুলো কোন ধরনের অসভ্যতামো!!! প্রেক্ষাগৃহে যেতে বলে, পাইরেসি করতে মানা করে—তারপর আবার নিজেরা সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতাটাকেই দুর্বিষহ করে তোলে!” শুধু এখানেই থামেননি শ্রেয়া। তিনি আরও লেখেন—“ তারপর বলে দর্শক হলে যায় না। কিন্তু এই তোমরা-ই সিনেমাকে তো এভাবে অসহ্য করে তুলছো! সিনেমা হল-ই তো ছবির আসল অভিজ্ঞতা দেয়, আর সেটাকেই নষ্ট করে দিচ্ছে এই কাটাছেঁড়া।”

এই কাণ্ডে আরও একটি বড় প্রশ্ন উঠেছে—দর্শকের বোধ-বিবেচনাকে বারবার অপমান করা কি বন্ধ হবে না?শ্রেয়ার কথায় স্পষ্ট, “এটা কেমন যুক্তি? আমরা কী দেখব, সেটা ঠিক করার অধিকার কি আমাদের নেই?আমরা নিজের সময়, নিজের টাকায় কী দেখব—সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আমাদের থাকা উচিত। আমাদের শিশু ভাবা বন্ধ করুন।”
জেমস গান-এর নতুন ‘সুপারম্যান’ ছবিতে সুপারম্যানের ভূমিকায় রয়েছেন ডেভিড কোরেনসেট, আর লোইস লেন হিসেবে দেখা গিয়েছে র্যা চেল ব্রোসনাহানকে। রয়েছেন নিকোলাস হোল্ট, মিলি অ্যালকক, নাথান ফিলিয়নরাও।

‘সুপারম্যান’ ছবির পরিচালকের আসনে বসেছেন জেমস গান। ছবিতে নামভূমিকায় রয়েছেন ডেভিড কোরেনসেট। তাঁর বিপরীতে র্যা চেল ব্রোসনাহান সাংবাদিক লুইস লেনের চরিত্রে। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন নিকোলাস হোল্ট, মিলি আলকক, এডি গাথেগি, অ্যান্থনি ক্যারিগান ও নাথান ফিলিয়ন।
একদিকে হলমুখো দর্শক ফেরাতে তাগিদ, অন্যদিকে ছবির পর ছবি কাটছাঁট—এই দ্বিচারিতা কি আদৌ থামবে?এই প্রশ্নই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রতিটি সিনেমাপ্রেমী মনে।এটাই কি ভারতীয় সেন্সরশিপের নতুন সুপারপাওয়ার? নাকি এভাবেই সিনেমা হলের অভিজ্ঞতাকে মেরে ফেলা হচ্ছে ধীরে ধীরে?
উত্তরের অপেক্ষায় গোটা সিনেপ্রেমী সমাজ।
