আজকাল ওয়েবডেস্ক: আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার AI171 ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকালে উড়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের উপর ভেঙে পড়ে, যাতে মোট ২৬৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। মাত্র একজন যাত্রী এই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন।

দুর্ঘটনাটি ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহণ ইতিহাসে অন্যতম প্রাণঘাতী। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২৩১ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য। বিমানের মালিকানা থাকা টাটা গোষ্ঠী প্রতিটি নিহতের পরিবারকে ২.৮ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছে—এর মধ্যে ১.৮ কোটি টাকা আন্তর্জাতিক মনট্রিয়াল কনভেনশনের অধীনে এবং অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা টাটা গোষ্ঠীর নিজস্ব উদ্যোগে প্রদান করা হবে।

বিমানটির ‘হাল’ বা দেহের বিমা মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৮০ থেকে ১১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ৬৬৫ থেকে ৯৬০ কোটি টাকা পর্যন্ত। বিমাটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়ায় বিমা সংস্থাগুলি এই পূর্ণ মূল্য পরিশোধে বাধ্য হতে পারে।

বিমা কাঠামো অনুযায়ী, প্রধান বিমা সংস্থা টাটা AIG মোট বিমার প্রায় ৪০ শতাংশ দায়িত্বে রয়েছে। বাকি অংশে রয়েছে নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসিউরেন্স, আইসিআইসিআই লম্বার্ড, এবং অন্যান্য সরকারি বিমা সংস্থা। তবে ভারতের বিমা সংস্থাগুলি সাধারণত মোট ঝুঁকির ১০ শতাংশেরও কম বহন করে। বাকি ৯০–৯৫ শতাংশ ঝুঁকি আন্তর্জাতিক পুনর্বিমা সংস্থাগুলির উপর নির্ভরশীল, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য AIG লন্ডন।

সব মিলিয়ে এই দুর্ঘটনার বিমা ক্ষতিপূরণ বাবদ খরচ হতে পারে ১,০০০ থেকে ১,২৫০ কোটি টাকার মধ্যে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে বিমানের ক্ষতি, যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ, এবং মাটিতে ঘটিত অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ। টাটা গোষ্ঠী দুর্ঘটনাস্থলে ক্ষতিগ্রস্ত মেডিকেল কলেজটি পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।

মনট্রিয়াল কনভেনশন অনুযায়ী, বিমান সংস্থাকে দুর্ঘটনার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সকল আইনি ক্ষতিপূরণ চূড়ান্ত করতে হবে। অবিলম্বে প্রাথমিক ১৮ লক্ষ টাকার (১৬,০০০ SDR) আর্থিক সহায়তা প্রদান বাধ্যতামূলক। তবে, যদি বিমানের গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তাহলে পরিবারগুলো অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিও করতে পারবে।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা গোটা দেশকে শোকস্তব্ধ করে তুলেছে। তদন্ত চলছে, এবং এয়ার ইন্ডিয়া ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্গঠন কার্যক্রমে ব্যস্ত।