আজকাল ওয়েবডেস্ক: বয়স বাড়ে ধীরে ধীরে—এমনটাই এতদিন ধরে ধারণা ছিল বিজ্ঞানীদের। কিন্তু সম্প্রতি ‘নেচার মেডিসিন’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক বিপ্লবী গবেষণা সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ল। জানানো হয়েছে, বার্ধক্য বা বয়স বৃদ্ধি আসলে ধাপে ধাপে ঘটে—তিনটি নির্দিষ্ট বয়সে শরীরে ঘটে যায় বড়সড় জৈবিক পরিবর্তন।

প্রায় ৪ হাজার ২৬৩ জন ১৮ থেকে ৯৫ বছর বয়সি মানুষের রক্তের প্লাজমা পরীক্ষা করে গবেষকরা দেখেছেন, শরীরের প্রোটিন স্তরের হঠাৎ পরিবর্তন ঘটে তিনটি নির্দিষ্ট বয়সে—৩৪, ৬০ এবং ৭৮ বছর বয়সে। এই সময়গুলোতে শরীরে এক ধরনের ‘জৈবিক ঢেউ’ ওঠে, যা প্রভাব ফেলে মেটাবলিজম, হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এমনকি মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপরও।

গবেষণার সহলেখক এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী টনি উইশ-কোরে জানিয়েছেন, “আমরা এতদিন ভেবেছিলাম বয়স বাড়ে একটানা ভাবে, আসলে তা নয়। একেকটি ধাপে শরীর যেন এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে।” এই আবিষ্কারে নতুন আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, এই বয়স-নির্দিষ্ট ‘টার্নিং পয়েন্ট’ চিহ্নিত করা গেলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা, জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে দীর্ঘায়ু এবং সুস্থ বার্ধক্য অর্জন করা যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বার্ধক্য আসলে এক টানা পতন নয়, বরং একের পর এক রূপান্তরের গল্প। আর সেই প্রতিটি রূপান্তরই হতে পারে রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য রক্ষার নতুন সুযোগ। এই চমকপ্রদ আবিষ্কার ভবিষ্যতের চিকিৎসা বিজ্ঞান ও বার্ধক্য বিষয়ক গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলেই মনে করছেন গবেষকরা।