আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহিলাদের যৌন ইচ্ছা নিয়ে সমাজে নানা রকম ধারণা প্রচলিত থাকলেও সাম্প্রতিক গবেষণা এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ বলছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আকাঙ্ক্ষা থেমে যায় না। বরং জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তা ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়।
তরুণ ও মধ্য বয়সে, বিশেষ করে ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, অনেক নারী যৌন আকাঙ্ক্ষার শিখরে পৌঁছান। হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা, মানসিক আত্মবিশ্বাস এবং শরীরের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব—এসব কিছু মিলে এই বয়সে যৌন চাহিদা অনেক বেশি থাকে। এ সময় নারী নিজেকে আরও ভালোভাবে জানতে পারেন এবং যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।
৪০-এর পরে, যখন শরীরে প্রাক-মেনোপজ এবং মেনোপজের পরিবর্তন দেখা দেয়, তখন অনেক নারী হরমোনজনিত কারণে যৌন ইচ্ছায় সামান্য ঘাটতি অনুভব করতে পারেন। যোনি শুষ্কতা, ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যা বা মানসিক উদ্বেগ এ সময় যৌন সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। তবে গবেষণা বলছে, এই সময়েও বহু নারী স্বাভাবিক যৌন জীবন উপভোগ করেন এবং কেউ কেউ এমনকি আগের তুলনায় বেশি মানসিক স্বাধীনতা এবং ঘনিষ্ঠতা অনুভব করেন। সন্তান প্রতিপালনের দায়িত্ব কমে যাওয়া ও নিজস্ব সময় বাড়ার ফলে তাঁরা নিজেদেরকে আরও উদারভাবে প্রকাশ করতে পারেন।
পঞ্চাশ, ষাট এমনকি সত্তরের দশকেও অনেক নারী যৌনভাবে সক্রিয় থাকেন। শারীরিক সম্পর্ক এখানে শুধুমাত্র যৌন চাহিদার বিষয় নয়, বরং মানসিক ঘনিষ্ঠতা, সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো, ভালোবাসা ও বন্ধনের এক রকম প্রকাশ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, যৌন জীবনকে যারা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করেন, তাঁদের মধ্যেই যৌন ইচ্ছা দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকে।
তবে এই আকাঙ্ক্ষাকে প্রভাবিত করে অনেকগুলো বিষয়—হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, সম্পর্কের টানাপড়েন, শারীরিক অসুস্থতা বা ওষুধের প্রভাব। আবার কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে যৌনতাকে তেমন গুরুত্ব না-ও দিতে পারেন, সেটিও একধরনের স্বাভাবিক মানসিকতা।
সব মিলিয়ে বলা যায়, নারীদের যৌন আকাঙ্ক্ষার কোনও নির্দিষ্ট বয়সসীমা নেই। ইচ্ছা, পরিস্থিতি এবং মনোভাবের উপর নির্ভর করে তা পরিবর্তিত হতে পারে। সমাজে এই বিষয়ে সচেতনতা ও ইতিবাচক আলোচনা বাড়লে নারীর যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণাগুলো দূর হবে, আর যৌন স্বাস্থ্য ও সম্পর্ক হবে আরও পরিপূর্ণ ও অর্থবহ।
