আজকাল ওয়েবডেস্ক: সমাজের চোখে ‘অসভ্য’, কিন্তু বিজ্ঞানের চোখে এই সব আচরণ আমাদের শরীরের সুস্থ রাখার নিরব সহচর। হার্ভার্ড হেলথ থেকে বিজ্ঞান পত্রিকা জার্নাল অব ইমিউনোলজি, এমন সব বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান অন্তত জানাচ্ছে তেমনটাই। তথাকথিত ‘ভদ্র’ সমাজে এই সব আচরণকে অশোভন, নোংরা কিংবা অভদ্র বলে মনে করা হয়। কিন্তু জানেন কি, এই ‘নোংরা’ অভ্যাসগুলির মধ্যেই লুকিয়ে আছে শরীরের উপকার?
১. নাক খোঁটা ও তার ‘পরিণতি’!
হ্যাঁ, কথাটা অস্বস্তিকর। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, নাক খোঁটা বা শিশুদের সর্দি চেটে ফেলার মধ্যে লুকিয়ে আছে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির চাবিকাঠি। অস্ট্রিয়ায় একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নাকের ভিতরের মিউকাসে থাকা ব্যাকটেরিয়া শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে আরও সক্রিয় করে তোলে।
২. উচ্চস্বরে ঢেকুর তোলা
 রেস্তোরাঁয়, অফিসে বা প্রেমিকার সামনে ঢেকুর তোলা ‘সামাজিক অপরাধ’। কিন্তু চিকিৎসাশাস্ত্র বলছে, নিয়মিত ঢেকুর হজমের পক্ষে ভাল। এটি পাকস্থলীর ভেতরে গ্যাসের চাপ কমায়, অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধ করে এবং খাদ্যনালির অস্বস্তি কমায়।
৩. খালি পায়ে হাঁটা
খালি পায়ে হাঁটলে রাস্তার ধুলো, পাথর, জীবাণু লেগে যায়। একথা অসত্য নয়। কিন্তু একে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ‘আর্থিং’ বা ‘গ্রাউন্ডিং’। মাটি স্পর্শ করলে শরীর প্রাকৃতিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে যা স্ট্রেস হরমোন কমায়, ঘুম ভাল করে, এমনকি হৃদযন্ত্রকেও সুস্থ রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে অন্তত ১৫ মিনিট খালি পায়ে ঘাসে হাঁটলে মন ও শরীর দুই-ই প্রশান্ত থাকে।
৪. ঘাম ঝরানো, যতই দুর্গন্ধ হোক না কেন
অনেকেই অতিরিক্ত ঘাম নিয়ে বিব্রত হন। কিন্তু ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া এটি টক্সিন বার করার প্রাকৃতিক রাস্তা। ঘামের মাধ্যমে ভারী ধাতু (যেমন সীসা, পারদ) এবং অপ্রয়োজনীয় লবণ শরীর ছেড়ে বেরিয়ে যায়। তার থেকেও বড় কথা, ঘাম শরীরের প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। মানে, এতে উপস্থিত পেপটাইড নানা রোগজীবাণুকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
৫. জোরে হাই তোলা: অলসতার চিহ্ন নয়, বরং ব্রেন কুলিং মেকানিজম
“তোর আবার হাই আসছে?” শিক্ষক বা বস-এর মুখে অনেকেই এহেন কটাক্ষ শুনেছেন। কিন্তু জানেন কি, হাই তোলা শুধু ক্লান্তির বহিঃপ্রকাশ নয়, এটি আসলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার একটি স্বাভাবিক পদ্ধতি? নিউরোসায়েন্টিস্টরা বলছেন, হাই তোলার সময় মুখ বড় করে খোলার ফলে ঠান্ডা বাতাস শরীরে পৌঁছয়, এর প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কেও, যা অতিরিক্ত উত্তাপ কমায়।