রিয়া পাত্র
"শহর জুড়ে যেন কেকের মরসুম" কথাটা যদি বলা হয় শেষ ডিসেম্বরে, নেহাত ভুল হবে না। শহরের সমস্ত পুরনো বেকারির সামনে লম্বা লাইন। হোম বেকারদের শ্বাস ফেলার সময় নেই। বড় রাস্তা থেকে পাড়ার গলি, টেবিল সাজিয়ে হাজির সান্তা আর রকমারি কেক। কেকের হরেক উপকরণ নিয়ে গৃহিণীরা রুদ্ধশ্বাসে পথ পেরোচ্ছেন। গন্তব্য কোথায়? এলাকার মাঝারি আর ছোট বেকারি। টালিগঞ্জ থেকে টেরিটি বাজার, বেকারির ওভেন বিশ্রাম পাচ্ছে না। মধ্য কলকাতার এক সরু গলির ভেতরেই রয়েছে এমন এক প্যান্ডোরাস বক্স। শতাব্দী প্রাচীন বড়ুয়া। এই ইলেকট্রিক ওভেনের জমানাতেও বড়ুয়া সহ বহু কেক বেকার আসলে ভরসা রাখেন উড-বেকে। কথায় আছে না, কাঠের জ্বালে স্বাদ বাড়ে। কীভাবে হয় এই উড-বেক? ছোট্ট সিঁড়ি দিয়ে উঠে, ঘুপচি একচিলতে জায়গা। চতুর্দিকে কেক তৈরির উপকরণ, কয়েকজন মানুষ, আর কেকের সুবাস। কয়েক দশক এই কাজের সঙ্গে যুক্ত শেখ জালাল জানালেন, এই ডিসেম্বরে প্রতিদিন তৈরি হয় অন্তত হাজার কেক। কাঠের ভাটিতে। কীভাবে হয় কাজ? জালাল জানালেন, গোলাকৃতি ওই জায়গার ভেতরে একসঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ৪০-৫০ কেজি কাঠ। সেই কাঠ পুড়ে ছাই হয়ে গেলে বাঁদিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভাটির ভেতরটা তখন কুকার বা ওভেনের ভেতরের মতোই। সেই সময়েই তৈরি থাকা কেকের ব্যাটার ফয়েলে ভরে ট্রেতে দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মিনিট ৪০ পর ভাটির ভেতর থেকে বের করে আনা হয় আস্ত কেক। প্যাটিস তৈরি হতে সময় লাগে ৩০ মিনিট। বড়ুয়ার নিজেদের কেক তৈরির পাশাপশি অনেকেই নিজেদের কেক বানাতে আসেন এখানে। ইয়া বড় প্যাকেটে ময়দা, চিনি, মাখন, ডিম, কয়েক রকমের ফল, এসেন্স সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণ নিয়ে হাজির হন তাঁরা। জালাল, নাজির, সিরাজরা সাহায্য করেন। এখানে আসার কারণ একটাই, স্বাদ। যেমন বৌবাজার থেকে এসেছিলেন সুজাতা ফিলিপস। তিন ধরণের কেক বানাচ্ছেন তিনি। স্পঞ্জ কেক, ড্রাই ফ্রুট কেক, ছানা কেক। তৈরি করবেন ওখানে বসে থেকেই। এসেছিলেন অ্যার্থি। তিনিও গত এক দশক ধরে আসছেন। ঘুপচি ঘরে কাঠ জ্বালানো শুরু হয় সকাল ৬টায়। তিন চার ঘণ্টা পর তাপ পড়ে গেলে ফের কাঠ জ্বালানো হয়। এভাবে চলতে থাকে দিন, রাত। সকাল থেকে রাত, সারাক্ষণ বেক হয় কেক। শেখ জালাল, সিরাজ মল্লিক, নাজির হোসেনরা ডিসেম্বরের শেষ ১০ দিন ঘুমনো দূর অস্ত, ঠিক করে নাওয়া-খাওয়ার সময়টুকুও পান না। কেক তৈরির যে সুবাস ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে, মানুষের মুখে হাসি ফোটে, তাতেই বোধহয় ক্লান্তি কেটে যায় তাঁদের।
"শহর জুড়ে যেন কেকের মরসুম" কথাটা যদি বলা হয় শেষ ডিসেম্বরে, নেহাত ভুল হবে না। শহরের সমস্ত পুরনো বেকারির সামনে লম্বা লাইন। হোম বেকারদের শ্বাস ফেলার সময় নেই। বড় রাস্তা থেকে পাড়ার গলি, টেবিল সাজিয়ে হাজির সান্তা আর রকমারি কেক। কেকের হরেক উপকরণ নিয়ে গৃহিণীরা রুদ্ধশ্বাসে পথ পেরোচ্ছেন। গন্তব্য কোথায়? এলাকার মাঝারি আর ছোট বেকারি। টালিগঞ্জ থেকে টেরিটি বাজার, বেকারির ওভেন বিশ্রাম পাচ্ছে না। মধ্য কলকাতার এক সরু গলির ভেতরেই রয়েছে এমন এক প্যান্ডোরাস বক্স। শতাব্দী প্রাচীন বড়ুয়া। এই ইলেকট্রিক ওভেনের জমানাতেও বড়ুয়া সহ বহু কেক বেকার আসলে ভরসা রাখেন উড-বেকে। কথায় আছে না, কাঠের জ্বালে স্বাদ বাড়ে। কীভাবে হয় এই উড-বেক? ছোট্ট সিঁড়ি দিয়ে উঠে, ঘুপচি একচিলতে জায়গা। চতুর্দিকে কেক তৈরির উপকরণ, কয়েকজন মানুষ, আর কেকের সুবাস। কয়েক দশক এই কাজের সঙ্গে যুক্ত শেখ জালাল জানালেন, এই ডিসেম্বরে প্রতিদিন তৈরি হয় অন্তত হাজার কেক। কাঠের ভাটিতে। কীভাবে হয় কাজ? জালাল জানালেন, গোলাকৃতি ওই জায়গার ভেতরে একসঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ৪০-৫০ কেজি কাঠ। সেই কাঠ পুড়ে ছাই হয়ে গেলে বাঁদিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভাটির ভেতরটা তখন কুকার বা ওভেনের ভেতরের মতোই। সেই সময়েই তৈরি থাকা কেকের ব্যাটার ফয়েলে ভরে ট্রেতে দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মিনিট ৪০ পর ভাটির ভেতর থেকে বের করে আনা হয় আস্ত কেক। প্যাটিস তৈরি হতে সময় লাগে ৩০ মিনিট। বড়ুয়ার নিজেদের কেক তৈরির পাশাপশি অনেকেই নিজেদের কেক বানাতে আসেন এখানে। ইয়া বড় প্যাকেটে ময়দা, চিনি, মাখন, ডিম, কয়েক রকমের ফল, এসেন্স সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণ নিয়ে হাজির হন তাঁরা। জালাল, নাজির, সিরাজরা সাহায্য করেন। এখানে আসার কারণ একটাই, স্বাদ। যেমন বৌবাজার থেকে এসেছিলেন সুজাতা ফিলিপস। তিন ধরণের কেক বানাচ্ছেন তিনি। স্পঞ্জ কেক, ড্রাই ফ্রুট কেক, ছানা কেক। তৈরি করবেন ওখানে বসে থেকেই। এসেছিলেন অ্যার্থি। তিনিও গত এক দশক ধরে আসছেন। ঘুপচি ঘরে কাঠ জ্বালানো শুরু হয় সকাল ৬টায়। তিন চার ঘণ্টা পর তাপ পড়ে গেলে ফের কাঠ জ্বালানো হয়। এভাবে চলতে থাকে দিন, রাত। সকাল থেকে রাত, সারাক্ষণ বেক হয় কেক। শেখ জালাল, সিরাজ মল্লিক, নাজির হোসেনরা ডিসেম্বরের শেষ ১০ দিন ঘুমনো দূর অস্ত, ঠিক করে নাওয়া-খাওয়ার সময়টুকুও পান না। কেক তৈরির যে সুবাস ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে, মানুষের মুখে হাসি ফোটে, তাতেই বোধহয় ক্লান্তি কেটে যায় তাঁদের।
