বীরেন ভট্টাচার্য: বড় পদে আনার ইঙ্গিত, প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছত্তিশগড়ের কুঙ্করি আসনে প্রচার সমাবেশে অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই আসনে বিজেপি প্রার্থীকে জেতালে তাঁকে বড় পদে আনা হবে। কংগ্রেস প্রার্থী ইউডি মিঞ্জকে সাড়ে ২৫ হাজার ভোটে হারিয়ে কুঙ্করি আসনে পদ্ম ফুটিয়েছেন আদিবাসী নেতা বিষ্ণু দেও সাই। তাঁকে রাইপুরের কূর্সিতে বসাল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। রবিবার দুপুরের পরেই দলের তরফে মুখ্যমন্ত্রী পদে নাম ঘোষণা করে বিজেপি।

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী পদে নাম চূড়ান্ত করতে রবিবার সকালেই রাইপুর পৌঁছে গিয়েছিলেন বিজেপির পর্যবেক্ষক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা, সর্বানন্দ সোনোওয়াল এবং দলের সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত কুমার গৌতম। এছাড়াও রাজ্যে পৌঁছে যান ছত্তিশগড়ের ইনচার্জ ওম মাথুর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য এবং সহ ইনচার্জ নবীন নীতিন। এক সপ্তাহ আগেই ছত্তিশগড় সহ ৫ রাজ্যের ভোটের ফলাফল প্রকাশ হয়। তারপরেও কেন এখনও মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হয়নি, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছাতেই পরিষদীয় দলের বৈঠক হয়। সেখানে বিষ্ণু দেও সাইকে দলের পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত করা হয়। অরুণ সাও এবং বিজয় শর্মাকে ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী করা হতে চলেছে। ছত্তিশগড়ে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংকে বিধানসভার অধ্যক্ষ করা হতে চলেছে।

এই রাজ্যটিতে মোট জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস। তবে ছত্তিশগড়ে সবচেয়ে বেশি রয়েছে ওবিসি সম্প্রদায়ের বাস। দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে আদিবাসী সমাজ। ফলে ওবিসি এবং আদিবাসী সমাজ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করা ছিল বিজেপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে শেষ পর্যন্ত আদিবাসী নামেই সিলমোহর দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপির প্রভাব তেমনভাবে ছিল না। যদিও এবারের নির্বাচনে সেই মনোভাব বদল করতে সক্ষম হয়েছে গেরুয়া শিবির। সরগুজা অঞ্চলের ১৪ আসনের মধ্যে সবকটিতে এবং বস্তার অঞ্চলের ১২টির মধ্যে ৮টি আসনে পদ্ম ফুটেছে।

বিষ্ণু দেও সাই সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এছাড়াও রাজ্যে বিজেপির অন্যতম মুখ রমন সিং এরও ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই কারণেই বিষ্ণুর ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। চারবারের সাংসদ বিষ্ণু দেও সাই। ২০১৪ সালে প্রথম মোদি সরকারের স্টিল মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ছত্তিশগড়ে বিজেপির সভাপতি হিসেবেও কাজ করেছে বিষ্ণু। দলের জাতীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। নরেন্দ্র মোদির দেওয়া গ্যারান্টি পূরণ করাই তাঁর প্রথম কাজ বলে জানিয়েছেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী। আবাসন প্রকল্পে রাজ্যের ১৮ লক্ষ উপভোক্তার জন্য ঘর মঞ্জুর করাই তাঁর প্রথম কাজ বলে জানিয়েছেন বিষ্ণু দেও সাই।