আজকাল ওয়েবডেস্ক: শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সভ্যতা এগিয়েছে। মানুষ একটা সময় জঙ্গলে, গুহায় থাকত সেখান থেকে সে সভ্য মানুষে পরিণত হয়েছে। একদিকে যেমন প্রযুক্তির বিপুল উন্নতি হয়েছে, তেমনি কিছু মানুষ এখনও পুরনো রীতিনীতি, ধ্যান ধারণাকে আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে ভালোবাসে। তাদের জীবন এখনও চলে প্রাচীন নিয়মে। সেরকমই এক আদিম উপজাতির গল্প বলা হবে এই রচনায়।  

 

 

 

মূলত মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ের কোলে বসবাস করে, আদিম এই উপজাতি। বাংলাদেশের রয়েছে এই উপজাতির মানুষ। এমনিতে সুন্দর, শান্তিপ্রিয় এই গোষ্ঠীর বাসিন্দারা। মেয়েদের মধ্যে ভাব বিনিময় করে যে ভাষার মাধ্যমে তার নাম খাসি ভাষা, সেই নামেই এই উপজাতির নামকরণ। এই উপজাতির বাসিন্দারা অনেকেই বর্তমানে ক্রিশ্চান এবং ইসলামসহ অন্যান্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। 

 

 

মূলত মাতৃতান্ত্রিক এই উপজাতি। এখানকার বাচ্চারা পরিচয় হিসেবে বাবার পদবি নয় ব্যবহার করে মায়ের পদবি। সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন মেয়েরা, পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ মেয়ে। এদের প্রিয় খাবার বুনো মাশরুম। পুরুষদের পোশাক সাদা গেঞ্জি আর ধুতি। অন্যদিকে খাসি উপজাতির মেয়েরা পরেন ওপরে এবং নিচে এক পাট কাপড়। যাঁর পোশাকি নাম ডিয়া কিয়াং। অনুষ্ঠানে পরেন দুই পাটের কাপড়। এর পোশাকি নাম ডিয়া কেরছা। মূলত প্রকৃতির পূজারি এই খাসি উপজাতির বাসিন্দারা। 

 

 

 

বিয়েতে সঙ্গী পছন্দের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে মেয়েদের। তাঁর এই স্বাধীনতায় পরিবারের কেউই হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পরিবারে মেয়েদের কথাই শেষ কথা। বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে এই উপজাতির নারীদের থাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা। যদিও বর্তমানে অনেকে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন। এদের বিবাহ বিচ্ছেদের একটি অদ্ভুত প্রথা প্রচলিত রয়েছে। পরিবারে বনিবনা না হলে স্বামী তার স্ত্রীকে পাঁচ টাকা দেন। স্ত্রী আবার উল্টে তাঁর স্বামীকে পাঁচ টাকা দেন। এরপর দুজনে মিলে সেই দশ টাকা নিয়ে গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তির কাছে যান। তিনি সেগুলোকে জলে ফেলে দেন। এরপরই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পূর্ণ হয়।