আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপিং কোচের চেয়ার থেকে সরে দাঁড়ানোর পরে বিস্ফোরক সন্দীপ নন্দী। হেড কোচ অস্কার ব্রজোঁর কাছ থেকে চরম অসম্মানিত হওয়ার পরে আহত সন্দীপ আজকাল ডট ইন-কে বলছেন, ''আমার সম্মানহানি যেখানে হয়, সেখানে আমি থাকি না। ইস্টবেঙ্গল ছাড়াই শ্রেয় বলে মনে করেছি।''
ইস্টবেঙ্গল সন্দীপের প্রাক্তন ক্লাব। বিভিন্ন সময়ে বিবিন্ন কোচের অধীনে তিনি ক্লাবের গোল আগলানোর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। সাফল্যের সঙ্গে নিজের কর্তব্য পালন করেছিলেন। আশিয়ান জয়ী গোলকিপার তিনি। সেই সন্দীপ বলছেন, ''ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে আমি সুস্থ পরিবেশ পাইনি। আমাকে সবসময়ে সন্দেহ করা হত। আমার সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতেন না কোচ। আমাকে বিশ্বাস করতেন না। আজ আমাকে বলেন, তুমি এই কাজের যোগ্য নও। আমি না হয় যোগ্য নই। উনি তো যোগ্য! সেই কারণেই বাংলাদেশের ক্লাব থেকে এদেশে আসতে হয়েছে। ভারতের একাধিক ক্লাবে চাকরি করতে পারেননি।''
শিল্ড ফাইনালে পেনাল্টি শুট আউটের আগে প্রভসুখান গিলকে বসিয়ে দেবজিৎ মজুমদারকে নামানো নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। আজ সোমবার কালীপুজোর দিনে তা সপ্তমে পৌঁছয়। সন্দীপ বলছেন, ''আমি বারংবার কোচের কাছে সরি বলেছি। দলের হারের নৈতিক দায়িত্ব আমার বলেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোচ রাগ পুষে রেখেছিলেন আমার উপরে। আজ দেখা হতে আমি আবারও সরি বললাম কোচকে। আমাকে উনি জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেন, তুমি পেনাল্টি প্র্যাকটিস করিয়েছিলে গোলকিপারদের? তুমি নিজের কাজ সঠিকভাবে করনি। কে তোমাকে বলেছিল দেবজিৎকে নামাতে? কার কোথায় চলেছিলে তুমি? আমি বলি, কোচ ভুল তো সবাই করে। আপনিও তো অনেক জায়গায় কোচিং করিয়েছেন। সব সিদ্ধান্ত কি আপনার সঠিক ছিল? কোচ পালটা বলেন, তুমি আমার কাজের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছ? তার পরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন সবার সামনে।''
গোয়ায় টিম হোটেলে পর্যন্ত ঢোকেননি সন্দীপ। মধ্যাহ্নভোজে না করে তিনি বেরিয়ে পড়েন কলকাতার উদ্দেশে।
উত্তেজিত সন্দীপ বলেন, ''সব সময়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রাখতে কোচ। ফাইনালের আগে আমি যদি পেনাল্টি প্র্যাকটিস করাতাম তাহলে অন্য চিন্তাভাবনা শুরু করে দিতেন এই কোচ। ভাবতেন আমরা যেখানে নব্বই মিনিটে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করছি, সেখানে সন্দীপ তা মনে করছে না। এই কোচ খুব সন্দেহবাতিক। নিজেই বলতেন, আমাকে শ্রদ্ধা করলে আমিও শ্রদ্ধা করব। উনি কি আমাকে সম্মান প্রদর্শন করলেন আজ?'' রাগে ফুঁসছেন সন্দীপ। বলছেন, ''আজ বিদেশিদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ফুটবলের সর্বনাশ করা হয়েছে। আমাকে উনি এভাবে বলতে পারেন না।''
অস্কারের ড্রেসিং রুমে দীর্ঘদিন থাকার ফলে হাতের তালুর মতো সব চেনা ভারতসেরা গোলকিপারের। তিনি বলছেন, ''এই ইস্টবেঙ্গল আরও খারাপ পারফরম্যান্স করবে। দলের মধ্যে সুস্থ ব্যাপারটাই আর নেই। ডুরান্ড কাপের ইস্টবেঙ্গল আর এই ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে অনেক পার্থক্য।''
রাগত সন্দীপ বলছেন, ''এই কোচ আমার পরামর্শ পেলে লাভবান হতেন। কোচকে ভাল ম্যানেজার হতে হয়। আমি ওঁকে শিখিয়ে দিতাম কীভাবে কথাবার্তা বলতে হয়। আমার চোখে উনি অনেক ভুল করেছেন।''
দীর্ঘদিন ধরেই ধিকিধিকি করে জ্বলছিল আগুন। এদিন তা দাবানলের আকার নিল।
আরও পড়ুন: ‘অ্যাডাম জাম্পা বলছি, বুমরার ফোন নম্বরটা দেবে?’, প্রতারকের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস করলেন অশ্বিন
