আজকাল ওয়েবডেস্ক: বছর ছয়েক আগে লাল-হলুদ জার্সিতে তাঁদের স্বপ্নগুলো একই ছিল। ইস্টবেঙ্গলকে জেতানোর জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তেনকিন্তু এই ২০২৫-এ তাঁদের পথ আলাদা হয়ে গিয়েছে। তাঁরা এক অপরের প্রতিপক্ষ। জবি জাস্টিন-মির্শাদদের স্বপ্নে আজ প্রথম আঘাত হানলেন নর্থ-ইস্টের আশির আখতার

তিরিশ মিনিট থেকে শুরু হল নর্থ-ইস্টের গোলবর্ষণ। চলল খেলার একেবারে শেষ লগ্ন পর্যন্ত। শুরুটা করলেন আশির আখতারপড়াশোনায় ভাল ছিলেন। হতে পারতেন বড় চাকুরে। কিন্তু ভাগ্য তাঁকে টেনে আনল ফুটবলে। বাবা ছিলেন গোলকিপার। তাঁর হাত ধরেই মাঠে যাওয়া। বলে শটে মারা। ফুটবলের প্রেমে পড়া।

নাগপুরের এমএম রব্বানি হাই স্কুলে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতেন আশির। দশম শ্রেণি পর চলে আসেন বোকারোতেসেইল অ্যাকাডেমিতে ট্রায়ালে নির্বাচিত হন আশির।

আরও পড়ুন: ম্লান ডায়মন্ডের দ্যুতি, হাফ ডজন গোলে ফের ডুরান্ড নর্থ ইস্টের

দশম শ্রেণি ফাইনাল পরীক্ষায় নব্বই শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন আশির। তাঁর দিদি পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আশির ফুটবল বেছে নেন। পেশাদার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ দেখতেন। সেই স্বপ্ন তাঁর সফল হয়েছে। শনিবার ডুরান্ড কাপ ফাইনালে বন্ধু জবি-মির্শাদদের ৬-১ গোলে হারায় আশিরের নর্থ ইস্ট। টানা দু'বার ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হল নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড।

রব্বানি ক্লাবের হয়ে নাগপুর লিগে খেলতেন আশির। নাগপুর লিগে খেলার সময় স্কুল ফাইনাল শেষ করেছিলেন। তাঁর উপরে প্রত্যাশা বাড়তে থাকে। পড়াশোনাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আশিরের পরিবার।

দ্বাদশ শ্রেণি পর, তাঁর দিদি চাইতেন পড়াশোনা চালিয়ে যান আশির। এসকে পরওয়াল কলেজে বিবিএ-তে ভর্তি হন তিনি। সেই সময়ে নাগপুর প্রিমিয়ার লিগ চলছিল। সারা বছর কলেজে যাননি আশির আখতারলিগ শেষ হওয়ার পর তিনি কলেজে যান। তখন সামনে পরীক্ষা। ক্লাসের শিক্ষকরা আশিরকে দেখে অবাক হয়ে যান। জিজ্ঞাসা করেন, এখন তিনি কী করবেন? আশির বলেছিলেন, আমি ম্যানেজ করার চেষ্টা করব।

কিন্তু পরীক্ষার কয়েকদিন আগে আশির মনস্থির করেন তিনি পরীক্ষা বসবেন না। সবাই অসন্তুষ্ট হলেও তাঁর বাবা মর্থন করেন ছেলেকে। এহেন আশির আখতারের জার্সির রং বদলেছেইস্টবেঙ্গলের পর মহমেডান স্পোর্টিং, শ্রীনিধি হয়ে তিনি এখন নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডেযুবভারতীতে লাল-হলুদ জার্সিতে বহু ম্যাচ খেলেছেন আশির। এদিন সেই যুবভারতীতেই বন্ধুদের স্বপ্ন ভেঙেচুরে দিলেন। ডুরান্ড কাপ ফাইনালে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবকে নিয়ে ছেলেখেলা করল। দিনের শুরু দেখে কিন্তু বোঝা যায়নি শেষটা এভাবে হবে। একটা সময় ডায়মন্ড হারবার পাল্লা দিয়ে লড়ে গিয়েছে। কিন্তু ম্যাচ যত গড়াল, নর্থ ইস্টের চাপ বাড়তে থাকল। ম্যাচের দখলও নিয়ে নেয় তারা। শেষমেশ ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবকে ছ'গোল দিয়ে ডুরান্ড কাপ নিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ে। গতবার মোহনবাগানকে পেনাল্টি শুট আউটে থমকে দিয়েছিল জন আব্রাহামের দল। এদিন কলকাতার আরেকটি ক্লাবকে মাটি ধরাল তারা। 

আরও পড়ুন: মোহনবাগান ১৭০১, ইস্টবেঙ্গল ৪০৮০, অপ্টা র‍্যাঙ্কিংয়ে লাল-হলুদকে পিছনে ফেলে সবুজ-মেরুনই দেশের একনম্বর ...