আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ লোকেশ রাহুল। নিঃশব্দ নায়ক। তাঁকে নিয়ে আলোচনা হবে না। তিনি রাজিও হবেন না। ওভাল টেস্ট ৬ রানে জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল ভারত। 


এটা ঘটনা, আইপিএল শেষ হওয়ার পর একটুও সময় নষ্ট করতে চাননি লোকেশ রাহুল। প্রতিটা মিনিট ইংল্যান্ড সফরের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। সে কারণেই ইংল্যান্ডে গিয়ে এতটা সফল হয়েছেন ভারতের ওপেনার। এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার।


ইংল্যান্ড সিরিজে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন রাহুল। পাঁচ টেস্টে দুটো শতরান এবং দুটো অর্ধশতরান–সহ ৫৩২ রান করেছেন তিনি। ভারতের সহকারী কোচ থাকার সময় রাহুলের সঙ্গে কাজ করেছেন নায়ার। রাহুল কী বদল এনেছেন তা ফাঁস করতে চাননি। তবে তাঁর সাফল্য দেখে মুগ্ধ।


নায়ার বলেছেন, ‘‌রাহুলের মধ্যে যা যা বদল দেখেছি তা বলতে রাজি নই। তাতে সব কিছু খোলসা হয়ে যাবে। সকলে সব বুঝে যাবে। তবে এটা বলতে পারি, যা–ই পরিবর্তন করে থাকুক, দারুণ কাজে লেগেছে। আমি মাঝেসাঝেই বলে থাকি, দল হোক বা ক্রিকেটার, দুই ক্ষেত্রেই কিছুটা ভাগ্যের দরকার হয়।’‌ 


আইপিএলের পর কী ভাবে রাহুল ইংল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন তা নিয়ে নায়ারের ব্যাখ্যা, ‘‌কঠিন পরিশ্রম করেছে। খুব কম লোকেই জানে যে সন্তান জন্মের পর কতটা দ্রুত ও ফিরে এসে আইপিএলের দলে যোগ দিয়েছিল। ও যখন ইংল্যান্ড সিরিজের প্রস্তুতি শুরু করেছে সেটা অনেকে ভাবতেও পারবে না। ও জানত এই সিরিজ়‌টার গুরুত্ব।’‌


নায়ার আরও বলেছেন, ‘‌আইপিএলে শেষ ম্যাচ খেলার পরেই ইংল্যান্ড সিরি‌জে কী ভাবে ভাল ফল করবে তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিল রাহুল। ওকে সাফল্য পেতে দেখে ভাল লাগছে। যে প্রশংসা পাচ্ছে সেটার যোগ্য ও। একার হাতে সব কাজ করতে হয় ওকে। তার পরেও রান করে যাচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে। এটুকু বলতে পারি, ভারতীয় ক্রিকেট নিরাপদ হাতেই রয়েছে।’‌

এদিকে, মহম্মদ সিরাজ ম্যাজিক দেখা গেল ওভালে। হায়দরাবাদির আগুনে স্পেলে ভারত সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনল।

চতুর্থ দিনে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ ফেলেছিলেন সিরাজ। সমালোচনা ধেয়ে এসেছিল তাঁর দিকে। প্রাক্তনদের তীব্র সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন সিরাজ। সেই সিরাজ এদিন প্রায়শ্চিত্ত করলেন। ক্রিকেট বারবার সুযোগ দেয় না। এক বলের খেলা ক্রিকেট। সেখানে ক্রিকেট আরও একটা সুযোগ দিয়েছিল সিরাজকে। হায়দরাবাদি তারকা সেই সুযোগ দু'হাতে লুফে নেন। ওভালে নিজেকে নিংড়ে দিলেন। তিরিশ ওভার হাত ঘুরিয়ে পাঁচ-পাঁচটি উইকেট নিলেন। পঞ্চম দিনের শুরুতে উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সাজঘরে জোরালো ধাক্কা দিয়েছিলেন  তিনি। ইংল্যান্ডের শেষটাও হল তাঁরই হাতে। 

বল করার সময়ে সিরাজকে দুটো ভারতবর্ষ পেরোতে হয়। এক ভারতবর্ষ তাঁকে উৎসাহ দেয়, প্রতিটি মুহূর্তের জন্য চিয়ার করে। আরেক ভারতবর্ষ অপেক্ষায় থাকে কবে সিরাজ ভুল করবেন। তিনি ভুল করলেই নখদাঁত বের করে সেই ভারতবর্ষ। সোমবার সিরাজ এক অন্য অবতারে ধরা দিলেন ওভালে। তিনিই দেশের নায়ক, তিনিই আবার মহানায়ক।