আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় ফুটবল আরও অন্ধকারে। আপাতত স্থগিত রাখা হল আইএসএল। এতদিন ধরে জল্পনা চলছিল। সেটাই সত্যি হল। শুক্রবার চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় এফএসডিএল। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন সহ আইএসএলে খেলা বাকি ক্লাবগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্লাবগুলোকে চিঠিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে তাঁদের চুক্তি ৮ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। যার ফলে, সেপ্টেম্বরে আইএসএল শুরু হলেও, তার কয়েকদিনের মধ্যে চুক্তি শেষ হয়ে যাবে। তারমধ্যে মাত্র এক তৃতীয়াংশ লিগ করা সম্ভব হবে। সুতরাং, এই পরিস্থিতিতে দেশের একনম্বর লিগ শুরু করা সম্ভব নয়।
বেশ কয়েকদিন ধরেই সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা চলছিল। একাধিকবার এফএসডিএলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ফেডারেশনের কর্তারা। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি। মাঝে শোনা গিয়েছিল, এক বছরের জন্য চুক্তি বাড়ানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে এইবছর হবে আইএসএল। যাতে হাফ ছেড়ে বেঁচেছিল ক্লাবগুলো। কিন্তু সেই নিয়েও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই আছে। যার ফলে কোনও গোপনীয়তা না রেখে, সরকারিভাবে বর্তমান পরিস্থিতি ক্লাবগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হল। এফএসডিএলের চিঠিতে লেখা রয়েছে, 'এমন টালমাটাল পরিস্থিতিতে আমরা আইএসএলের ২০২৫-২৬ মরশুম করার মতো জায়গায় নেই। যতদিন না নতুন চুক্তি হচ্ছে বা পরিস্থিতি স্পষ্ট হচ্ছে, ততদিন আইএসএল স্থগিত রাখা হল।' অর্থাৎ, সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে না আইএসএল। আদৌ কবে ভারতের একনম্বর লিগ শুরু হবে, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চলে আইএসএল। কিন্তু এবার ফেডারেশনের ফুটবল ক্যালেন্ডারে লিগের কোনও উল্লেখ ছিল না। সেখান থেকেই প্রশ্ন ওঠে। তারপরই গোটা পরিস্থিতি জানা যায়। তবে আইএসএল যে স্থগিত করে দেওয়া হবে, সেটা ভাবা যায়নি। শোনা গিয়েছিল, সমস্যা মিটে যাবে। দেরীতে শুরু হবে আইএসএল। ফেডারেশনের একাংশের দাবি ছিল, সম্ভবত নভেম্বরে শুরু হবে আইএসএল। কিন্তু বর্তমানে তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে এফএসডিএলের সঙ্গে ১৫ বছরের চুক্তি হয় এআইএফএফের। ফেডারেশনকে বছরে ৫০ কোটি দেয় আয়োজক সংস্থা। দুই সংস্থার মধ্যে মাস্টার্স রাইট এগ্রিমেন্ট না হওয়া পর্যন্ত আইএসএল শুরু করা যাবে না। এখানেই গণ্ডগোল। বর্তমানে ফেডারেশনের সংবিধান চূড়ান্ত হয়নি। বর্তমানে যে কমিটি ফেডারেশন চালাচ্ছে, সেটা অস্থায়ী কমিটি। নির্বাচন হতে পারে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে। বদলে যেতে পারে পুরো কমিটি। সেক্ষেত্রে এফএসডিএলের সঙ্গে নতুন চুক্তি করবে সেই নতুন কমিটি। এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি। অনেকটা সময় লাগবে। যার ফলে, রাতারাতি সমস্যার সমাধান হওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়। এফএসডিএলের চিঠির পর বিপদে পড়ে গিয়েছে ক্লাবগুলো। প্রচুর অর্থ খরচ করে প্লেয়ার সই করানো হয়েছে। শেষপর্যন্ত আইএসএল না হলে, সমস্যায় পড়ে যাবে তাঁরা। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, আইএসএল এখন বিশ বাঁও জলে। এর জন্য সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেই দায়ী করতে হবে। ভারতীয় ফুটবলে সম্প্রতি কোনও সাফল্য নেই। ছেলেদের জাতীয় দলও তথৈবচ। সদ্য গোল্ডেন হ্যান্ডসেক করে বিদায় জানানো হয় কোচ মানোলো মার্কুয়েজকে। নতুন কোচ নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। তারমধ্যেই এই বিপত্তি। বড় ধাক্কা ভারতীয় ফুটবল।
