আজকাল ওয়েবডেস্ক:ভারতের বাঁ হাতি ওপেনার অভিষেক শর্মাকে নিয়ে গত কয়েকমাসে কম চর্চা হয়নি। যে কোনও বোলারের রাতের ঘুম কেড়ে নেন তিনি। প্রথম বল থেকেই তিনি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে শুরু করে দেন। ভারতের হারের দিনেও তাঁকে উজ্জ্বল দেখিয়েছে। অভিষেক ৩৭ বলে ৬৮ রান করেন। আটটি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে হর্ষিত রানা ৩৩ বলে ৩৫ রান করেন। ৪৭ বলে এই দু'জন ষষ্ঠ উইকেটে ৫৬ রানের পার্টনারশিপ গ়ড়েন। একসময়ে ৭.৩ ওভারে ভারতের রান ছিল ৫ উইকেটে ৪৯। তাঁর এই লড়াকু ইনিংস প্রশংসিত হয়। ভারতের প্রাক্তন অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান মনে করেন, হর্ষিত রানার সঙ্গে পার্টনারশিপ চলাকালীন অভিষেক শর্মা আরও বেশি বল খেলতে পারতেন। ওই ৪৭ বলের মধ্যে বাঁ হাতি ওপেনার খেলেন ১৪ বল। ইউটিউব চ্যানেলে পাঠান বলেছেন, ''পাওয়ারপ্লেতে নিখুঁত ছিল অভিষেক। অন্য প্রান্তে উইকেট পড়ার সময়েও স্বাধীনভাবে শট খেলছিল। কিন্তু সেই পার্টনারশিপের সময়ে বেশিরভাগ স্ট্রাইক গিয়েছিল হর্ষিত রানার কাছে। ৪৭ বলের মধ্যে অভিষেক মাত্র ১৪ বল খেলেছিল। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, ইনিংসের প্রায় অর্ধেক সময় এবং সেখানেই অভিষেকের আরও কিছুটা দায়িত্ব নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।'' 

পাঠান আরও বলেন, ''নিঃসন্দেহে, অভিষেক শর্মা বর্তমানে ভারতের এক নম্বর টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তার আরও একটু বেশি সচেতনতার সঙ্গে খেলার প্রয়োজন ছিল। আমি যদি ড্রেসিংরুমের অংশ হতাম, তাহলে আমি অভিষেককে বলতাম, ভাই, তোমার আরও বেশি দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল। হর্ষিত রানা ৩৩ বল খেলেছে আর তুমি মাত্র ১৪টা বল। অভিষেক শর্মাকে এদিকে আরও বেশি নজর দিতে হবে।'' 

গোটা ম্যাচ জুড়েই আধিপত্য দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তারকা সমৃদ্ধ ভারতীয় লাইন আপকে একাই ধসিয়ে দিলেন জস হ্যাজলউড। একবারের জন্য ম্যাচে ফিরতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। জস হ্যাজলউড একটানা চার ওভার টেস্ট ম্যাচের লাইন লেন্থে বল করে গেলেন।

আর তাতেই ম্যাজিকের মত কাজ হল। হয় মারতে গিয়ে, না হয় কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন গিল, তিলক, স্যামসনরা। ৩৭ বলে ৬৮ রান একা লড়ে গেলেন অভিষেক শর্মা। কিন্তু এই রান ডিফেন্ড করতে শুরু থেকেই উইকেট তুলতে হত ভারতীয় বোলারদের।

সেটা না করতে পারায় সহজেই চার উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। এদিন উইকেটে স্পিনারদের জন্য খুব একটা বেশি কিছু ছিল না। তা সত্ত্বেও ভারত এদিন খেলিয়েছিল তিন স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী, কুলদীপ যাদব এবং অক্ষর প্যাটেলকে।

এদিন টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন মিচেল মার্শ। শুরুতেই হ্যাজলউড ফেরান শুভমান গিলকে(৫)। এদিন তিন নম্বরে নেমেছিলেন সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু তিনিও বেশিক্ষণ টেকেননি। ২ রান করে নাথান এলিসের শিকার হন।

রান পাননি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব(১) এবং তিলক ভার্মাও(০)। দু'জনেই শিকার হন জস হ্যাজলউডের। তবে পরপর উইকেট পড়লেও একদিক থেকে খেলা ধরে রেখেছিলেন অভিষেক শর্মা। মনে হচ্ছিল, তিনি এক পিচে ব্যাট করছেন আর বাকিরা অন্য পিচে।

তবে এদিন ব্যাটিং অর্ডারে সবথেকে বড় চমক দেখা যায় হর্ষিত রানাকে নিয়ে। শিভম দুবের আগে নামেন রানা। একদিক থেকে যখন অভিষেক মারছিলেন তিনি স্ট্রাইক রোটেট করে সাহায্য করেন দলের রান বাড়াতে। তিনি ফেরেন ৩৫ রানে। 

হর্ষিত এবং অভিষেকের পার্টনারশিপেই ১০০ পেরোয় ভারত। অভিষেক(৬৮) ফেরার পর আর রান এগোয়নি ভারতের। রান পেলেও সমালোচনা ধেয়ে আসছে অভিষেকের দিকে।