আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফুটবল পরিক্রমার শুরুটা হয়েছিল সেই বর্ধমান থেকে। অ্যাথলিটদের মতো চেহারা সেই ছেলেবেলা থেকেই। সেই কারণে সহজেই তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেলতেন।
ছোটবেলা থেকে তাঁর শয়নে, স্বপনে, জাগরনে ছিলেন শিশির ঘোষ। মোহনবাগানের ডাকাবুকো স্ট্রাইকারের মতো আকাশছোঁয়া স্পট জাম্প দিয়ে গোল করবেন, এই স্বপ্ন দেখতেন।
আবার মনের ভিতরে দোলাচলও ছিল। স্ট্রাইকার না গোলকিপার, এই নিয়ে দোদুল্যমান ছিলেন বর্ধমানের ছেলেটি। জীবন খাতার প্রতি পাতায় যে কী চিত্রনাট্য লেখা আছে, তা কি কেউ আগে থেকে জানতে পারেন! তাঁর ছেলেবেলার কোচ গৌতম সরকার মনে প্রাণে চাইতেন সন্দীপ বারের নীচে হাত ছড়িয়ে দাঁড়াবেন। তাঁর ওই প্রশস্ত হাতে আটকে যাবে প্রতিপক্ষের সব আক্রমণ। খেলোয়াড় জীবনে একবার অমল দত্তও তাঁকে নামিয়ে দিয়েছিলেন স্ট্রাইকার হিসেবে। কিন্তু হোনি কো কৌন তাল সক্তা হ্যায়। কালক্রমে সন্দীপ হয়ে উঠলেন ভারতসেরা এক গোলকিপার। ছেলেবেলার কোচ গৌতম সরকার যা চেয়েছিলেন, তাই হয়ে উঠলেন সন্দীপ। কোচকে গুরুদক্ষিণা দেন।
সোনালি শিবির-মোহনবাগান ম্যাচ তাঁর উপরে ফেলে পাদপ্রদীপের আলো। ওই ম্যাচ এক ঝটকায় খুলে দিয়েছিল জাতীয় দলের দরজা। তার পরে তিনি জিতে নেন জাতীয় লিগ, আই লিগ। ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে আশিয়ান কাপ জয় তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা। খেলেছেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মাহিন্দ্রা, চার্চিল ব্রাদার্সের মতো ভারতবিখ্যাত সব ক্লাবে। সেই সন্দীপ নন্দী ফিরে এলেন তাঁরই পুরনো ক্লাবে। তবে এবার তাঁর ভূমিকা বদলে গেল। এবার তিনি অস্কার ব্রুজোঁর দলের গোলকিপিং কোচ।
খেলোয়াড় জীবনে প্রতিপক্ষের দুর্ধর্ষ সব স্ট্রাইকারের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে দলকে রক্ষা করেছেন। ফুটবলের অ আ ক খ-র পাঠ তিনি ভালই দিতে পারেন তরুণ শিক্ষার্থীদের। কোচিং জীবন শুরু করে দিয়েছেন বেশ কয়েক বছর ধরেই। ভূভারতের একাধিক ক্লাবে তিনি গোলকিপিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন সুনামের সঙ্গে। আইএসএলের ক্লাব নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড, মহমেডান স্পোর্টিং, ডায়মন্ড হারবার, রাজস্থান ইউনাইটেড হয়ে সন্দীপ এবার লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাবের গোলকিপিং কোচ।
ইস্টবেঙ্গলের লাল-হলুদ জার্সি, সন্দীপ নন্দী যেন একসুতোয় বাঁধা। দুর্দান্ত সব ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন খেলোয়াড় জীবনে। খেলোয়াড় জীবনে তিনি ক্লাবকে নিয়ে গিয়েছিলেন সাফল্যের শীর্ষে, এবার গোলকিপিং কোচ হিসেবেও পুরনো ক্লাবকে অনেক কিছু ফেরত দিতে চান বহু যুদ্ধের সৈনিক সন্দীপ নন্দী।
