আজকাল ওয়েবডেস্ক: টেস্ট ক্রিকেটের মেয়াদ পাঁচ দিন থেকে কার্যত দু’দিনে নেমে আসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও টড গ্রিনবার্গ।
তাঁর মতে, পরপর উইকেট পড়ার হারে দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়লেও, দীর্ঘমেয়াদে এই ধরনের প্রবণতা টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
পার্থে শুরু হওয়া অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্ট মাত্র দু’দিনেই শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই আলোচনা নতুন করে প্রকাশ্যে আসে। এমনকী, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বক্সিং ডে টেস্টেও ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছে দু’দিনে।
কোনও টিম ২০০ রানও তুলতে পারেনি এক ইনিংসে, পুরো দাপট দেখিয়ে গিয়েছেন বোলাররা। চলতি বছরের বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনেই পড়েছে ২০টি উইকেট, যা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।
তবে এসবের মধ্যেও, এমসিজিতে প্রথম দিনে রেকর্ড ৯৪ হাজার দর্শকের উপস্থিতি নজর কেড়েছে। গ্রিনবার্গের মতে, এমন রোমাঞ্চকর দিন মাঠে উপস্থিত দর্শকদের স্মৃতিতে বহুদিন থেকে যাবে।
এসইএন ক্রিকেটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রিনবার্গ বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, রাতে আমি ভাল করে ঘুমোতে পারিনি। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য দারুণ একটা দিন ছিল। এত বিপুল সংখ্যক দর্শক মাঠে এসে যে অভিজ্ঞতা পেয়েছেন, তা অসাধারণ।’
তবে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করে দেন, ‘আমাদের আসল চ্যালেঞ্জ হল এই অভিজ্ঞতা যেন শুধু এক দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। দিনের পর দিন যেন দর্শকদের এমন অভিজ্ঞতা দেওয়া যায়, সেটাই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।’ একদিনে ২০টি উইকেট পড়া কী টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ক্ষতিকারক?
এই প্রসঙ্গে গ্রিনবার্গ স্পষ্ট করে জানান, বিষয়টি উদ্বেগের। তাঁর মতে, অতিরিক্ত উইকেট পতন টেস্ট ক্রিকেটকে ছোট ফরম্যাটের দিকে ঠেলে দেয়, যা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া মোটেই চায় না।
এতে শুধু খেলাই নয়, ব্যবসায়িক দিক থেকেও ক্ষতি হয় বলে মত তাঁর। গ্রিনবার্গ বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত উত্তরটা আমার মতে, হ্যাঁ। একজন দর্শক হিসেবে এটা যতই রোমাঞ্চকর বা উপভোগ্য হোক না কেন, আমরা চাই টেস্ট ক্রিকেট আরও দীর্ঘস্থায়ী হোক। সোজা কথা, টেস্ট ম্যাচ ছোট হলে তা ব্যবসার জন্য খারাপ। এর চেয়ে স্পষ্ট আর কিছু বলা যায় না।’
তিনি আরও জানান, ব্যাট ও বলের মধ্যে ভারসাম্য ফেরানো জরুরি। তাঁর মতে, প্রথম দিনের পরিস্থিতি বোলারদের কিছুটা বাড়তি সুবিধা দিয়েছিল, যদিও এর জন্য শুধু পিচকে দায়ী করতে নারাজ তিনি।
গ্রিনবার্গের কথায়, ‘আমি চাই ব্যাট আর বলের মধ্যে আরও ভারসাম্য থাকুক। আমার মনে হয়েছে, প্রথম দিনটা একটু বেশি বোলারদের পক্ষে ছিল। এর দায় পুরোপুরি পিচের নয়, ব্যাটারদেরও কিছু দায় রয়েছে। কিন্তু এখানে আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ অবশ্যই আছে।’
তবে এই সমস্যা দ্বিতীয় দিনেও অব্যাহত থাকে। দিনের প্রথম সেশনেই আরও ৬টি উইকেট পড়ে। তারপর অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে যায় ১৩২ রানে।
১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে দু’দিনেই টেস্ট পকেটে ভরে নেয় বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড। সব মিলিয়ে, টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে হলে দ্রুতই ব্যাট–বলের ভারসাম্য ও ম্যাচের স্থায়িত্ব নিয়ে ভাবনাচিন্তা জরুরি বলে মনে করছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ কর্তা।
