আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় ক্রিকেটারদের ফিটনেস ধরে রাখতে এবার নতুন পরীক্ষা চালু করতে চলেছে বিসিসিআই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, বর্তমান ফিটনেস পরীক্ষার পাশাপাশি ভারতীয় ক্রিকেটে এবার যুক্ত হতে চলেছে রাগবি-ভিত্তিক ‘ব্রঙ্কো টেস্ট’। এই টেস্টে একাধিক শাটল রান করতে হয়—প্রথমে ২০ মিটার, তারপর ৪০ মিটার এবং শেষে ৬০ মিটার। মোট পাঁচ সেটে এই দৌড় সম্পূর্ণ করতে হয় খেলোয়াড়দের, তাও কোনও বিরতি ছাড়া। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ মিনিট। ভারতীয় দলের স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ আড্রিয়ান লে রু এই পরীক্ষা চালুর প্রস্তাব দেন। তাঁর মতে, বিশেষ করে দ্রুতগতির বোলারদের আরও বেশি দৌড় করানো জরুরি, কারণ ফিটনেস সমস্যার জেরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দল ভুগেছে।

দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরও এই বিষয়ে একমত হন। উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত বিসিসিআইয়ের ফিটনেস পরীক্ষার তালিকায় ছিল ‘ইয়ো-ইয়ো টেস্ট’ এবং দু’কিলোমিটার টাইম ট্রায়াল। এর পাশাপাশি এবার ব্রঙ্কো টেস্টকেও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। জানা গেছে, বেঙ্গালুরুর বিসিসিআই সেন্টার অব এক্সেলেন্সে ইতিমধ্যেই কিছু শীর্ষ ক্রিকেটার এই পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছেন। এক বিসিসিআই সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘ব্রঙ্কো টেস্ট সেন্টার অব এক্সেলেন্সে চালু হয়েছে। কিছু চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার বেঙ্গালুরুতে গিয়ে টেস্ট সম্পন্ন করেছেন। এই পরীক্ষা চালুর মূল লক্ষ্য হল নির্দিষ্ট ফিটনেস মান বজায় রাখা।

লক্ষ্য করা গেছে, ভারতীয় ক্রিকেটাররা,বিশেষত ফাস্ট বোলাররা যথেষ্ট দৌড়াচ্ছেন না, বরং জিমে অতিরিক্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাই তাঁদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, এবার থেকে আরও বেশি দৌড় করতে হবে’। ফিটনেস সংক্রান্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মূলত ভারতের ফাস্ট বোলাররা। সাম্প্রতিক ইংল্যান্ড সিরিজে দেখা গেছে, কেবল মহম্মদ সিরাজই পাঁচটি টেস্টে খেলতে পেরেছিলেন। ফলে নতুন ফিটনেস মানদণ্ড কার্যকর হলে ভারতীয় বোলারদের শরীরচর্চায় বড় পরিবর্তন আসবে বলেই মনে করছে বিসিসিআই। উল্লেখ্য, ইংল্যান্ড সিরিজের পর গৌতম গম্ভীরের লক্ষ্য এবার এশিয়া কাপ জয়। দলে স্কাইয়ের ডেপুটি হিসেবে ফিরেছেন শুভমান গিল। তাঁকে সহ অধিনায়ক করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন সুনীল গাভাসকরও। তাঁর দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে চর্চা চলছিল।

কিন্তু গিলকে সূর্যকুমারের ডেপুটি করে ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়ে দেয় বোর্ড। গাভাসকর‌ মনে করেন, ইংল্যান্ডে যে দুর্ধর্ষ ফর্মে ছিলেন গিল, বোর্ড একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে তাঁর সব ফরম্যাটে অধিনায়ক হওয়ার রাস্তা খুলে দেবে। গাভাসকর বলেন, 'মাত্র দু'সপ্তাহ আগে ৭৫০ রানের বেশি করেছে। এইধরনের ফর্মে থাকা একজন প্লেয়ারকে বাদ দেওয়া যায় না। ওকে সহ অধিনায়ক করার সিদ্ধান্তও সঠিক। এর ইঙ্গিত, ভবিষ্যতে ওকে টি-২০ অধিনায়ক হিসেবেও ভাবা হতে পারে। আমার মতে, খুবই ভাল সিদ্ধান্ত। ইংল্যান্ডে ও নজর কেড়েছে। প্রথমবার টেস্ট দলের অধিনায়ক হয়ে ৭৫০ রানের বেশি করে বুঝিয়ে দিয়েছে কত ভাল চাপ সামলাতে পারে। সহ অধিনায়ক করা থেকে স্পষ্ট যে ভবিষ্যতে গিলকেই সব ফরম্যাটে ভারতীয় অধিনায়ক করা হবে।'

২০২৪ সালের জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ টি-২০ খেলেন শুভমন। ইংল্যান্ডে ভাল নেতৃত্বের পর তাঁকে অল ফরম্যাট প্লেয়ার করে তুলতে চাইছে বোর্ড। আপাতত টি-২০ তে দলকে নেতৃত্ব দেবেন সূর্যকুমার। গিল ছাড়াও এশিয়া কাপের দলে উল্লেখযোগ্য সংযোজন যশপ্রীত বুমরা এবং কুলদীপ যাদব। গতবছর বার্বাডোজে টি -২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর আবার সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে ফিরলেন দুই তারকা বোলার। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, ওয়াশিংটন সুন্দর, রিয়ান পরাগ, ধ্রুব জুরেল এবং যশস্বী জয়েসওয়ালকে রিজার্ভে রাখা হয়েছে। দল নির্বাচনের পর সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকর এবং অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।