আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ শেষ হল ভারত–ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ। পাঁচ টেস্টই গড়িয়েছে পাঁচ দিন অবধি। ওভালে দেখে মনে হয়েছিল, চতুর্থ দিনই খেলা শেষ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু সেই টেস্টও গড়িয়েছে পঞ্চম দিনে।


টেস্টের ইতিহাসে মাত্র চার বার এমন হয়েছে যে, সিরিজের পাঁচটা টেস্টই পাঁচ দিনে গড়িয়েছে। প্রথম হয়েছিল ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে সিরিজে। তার পর ২০০৪–০৫ অ্যাশেজ সিরিজে। শেষ বার ২০১৭–১৮ অ্যাশেজ সিরিজে পাঁচ টেস্টই পাঁচ দিনে গড়িয়েছিল। সেই সিরিজ অস্ট্রেলিয়া ৪–০ জিতেছিল। তার সাত বছর পর আবার পাঁচ টেস্টের সিরিজ হল। ভারত ও ইংল্যান্ড ২–২ ড্র করল।


ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ২০০৮–০৯ উইজডেন ট্রফিতে পাঁচটা টেস্ট হয়েছিল। তার পর থেকে গত ১৬ বছরে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড শুধু নিজেদের মধ্যে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলেছে। বাকি কোনও দল খেলেনি। ফলে পাঁচ টেস্টের সিরিজের সংখ্যা কমেছে। ২০১৭–১৮ অ্যাশেজ ও সদ্য সমাপ্ত ভারত–ইংল্যান্ড সিরিজের মাঝে সাতটা পাঁচ টেস্টের সিরিজ হয়েছে।


মাঝের সাতটা সিরিজের মধ্যে তিনটে অ্যাশেজ, তিনটে ভারত–ইংল্যান্ড ও একটা ভারত–অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। ২০১৮ সালে ভারত খেলতে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। পাঁচ টেস্টের সিরিজ ইংল্যান্ড জিতেছিল ৪–১ ফলে। ২০১৯ সালের অ্যাশেজ ২–২ ড্র হয়েছিল। ২০২১–২২ অ্যাশেজ অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ৪–০ ব্যবধানে। সেই বছরই ইংল্যান্ডে খেলতে গিয়েছিল ভারত। সিরিজ ২–২ ড্র হয়। ২০২৩ সালের অ্যাশেজ ২–২ ড্র হয়েছিল। ২০২৩–২৪ ভারতের মাটিতে খেলতে এসে ১–৪ সিরিজ হেরেছিল ইংল্যান্ড। ২০২৪–২৫ ভারত খেলতে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। ১–৩ হেরেছিল ভারত।


এই সাতটা সিরিজের মধ্যে দুটো সিরিজ এমন হয়েছে যেখানে চারটে টেস্ট পাঁচ দিন ও একটা টেস্ট চার দিনে গড়িয়েছে। ২০২১–২২ এ ভারত খেলতে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। সেখানে তৃতীয় টেস্ট চার দিনে শেষ হয়েছিল। বাকি চারটে টেস্ট পাঁচ দিনে গড়িয়েছিল। ২০২৩ সালের অ্যাশেজেও তৃতীয় টেস্ট চার দিনে শেষ হয়েছিল। বাকি চারটে টেস্ট শেষ হয়েছিল পাঁচ দিনে।


এটা মানতেই হবে টেস্ট ক্রিকেটকে নতুন জন্ম দিয়েছে এই সিরিজ। সোমবার ওভালে সিরিজ শেষ হয়ে গেলেও তার রেশ এখনও যায়নি। অধিনায়ক শুভমন গিল সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‌ঝড়কে তারাই ভয় পায় যারা তৈরি থাকে না।’‌ যশস্বী জয়েসওয়ালের কথায়, ‘‌স্বপ্ন দেখার সাহস দেখাও। টেস্ট ক্রিকেটই সেরা।’‌ লোকেশ রাহুল সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‌টেস্ট ক্রিকেট দীর্ঘজীবী হোক। একটা ফরম্যাট যেখানে দক্ষতা, ধৈর্য ও আবেগ প্রয়োজন। এর কোনও শর্টকাট হয় না।’‌ পুরো সিরিজে খেলতে না পারলেও ঋষভ পন্থ লিখেছেন, ‘‌এমন একটা সফর যা সকলের পরীক্ষা নিয়েছে। লড়াই হয়েছে। আমরা হার না মানা মানসিকতা দেখিয়েছি। টেস্টের অন্যতম সেরা সিরিজ হয়েছে। দলের সকলকে নিয়ে সত্যিই গর্বিত।’‌ 


এদিকে, ওভাল টেস্ট জিতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তালিকায় এক ধাপ উঠে এসেছে ভারত। সরিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ডকে।


শুভমন গিলের দল এখন রয়েছে তিন নম্বরে। ওভালে জিতে ১২ পয়েন্ট পেয়েছে ভারত। এই টেস্টের আগে তিনে ছিল ইংল্যান্ড। তারা নেমে গিয়েছে চারে।
ভারত এবং ইংল্যান্ড, দুটো দলের কাছেই এটা পরবর্তী বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সিরিজ ছিল। দুই দলই দুটো করে ম্যাচ জিতেছে। একটি ড্র হয়েছে। তবে লর্ডসে মন্থর ওভার রেটের কারণে আইসিসি ইংল্যান্ডের দু’পয়েন্ট কেটে নিয়েছে। তাই ভারতের নীচে চলে গিয়েছে তারা।


আপাতত পাঁচ টেস্টে ভারতের ২৮ পয়েন্ট। শতাংশের বিচারে পয়েন্ট ৪৬.৬৭। ইংল্যান্ডের ২৬ পয়েন্ট এবং পয়েন্ট শতাংশ ৪৩.৩৩। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিনটে টেস্টেই হারানোর কারণে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। তাদের ৩৬ পয়েন্ট। পয়েন্ট শতাংশ ১০০। দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কা। তাদের পয়েন্ট শতাংশ ৬৬.৬৭।


পঞ্চম এবং ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ (পয়েন্ট শতাংশ ১৬.৬৭) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ (০)। নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নতুন চক্রে এখনও কোনও টেস্ট খেলেনি।