অবাস্তব সৌন্দর্যের মানদণ্ড আজ মানুষের জীবনে কী ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছেন এক মহিলা। যিনি নিজের শরীরকে 'পারফেক্ট' দেখানোর লক্ষ্যে এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষকে রীতিমতো বিস্মিত করেছে। জানা গেছে, ওই মহিলা সৌন্দর্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নিজের শরীর থেকে একাধিক পাঁজরের কেটে বার করে দিয়েছেন। যা সাধারণত কোনও স্বাস্থ্যগত কারণ ছাড়া করা হয় না এবং এতে চিকিৎসা সংক্রান্ত ঝুঁকিরও থাকে।
এখানেই শেষ নয়, অস্ত্রোপচারের পর মহিলা চিকিৎসকদের অনুরোধ জানান, অপসারিত হাড়গুলো যেন তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মহিলার দাবি ছিল, এই হাড়গুলো তার 'সৌন্দর্য যাত্রার স্মৃতি', যা সে নিজের কাছে রাখতে চায়। চিকিৎসকেরা বিষয়টিকে 'অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও উদ্বেগজনক' বলে মন্তব্য করেছেন।
চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলেছেন, শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য পাঁজরের হাড় অপসারণ শরীরের গঠন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুরক্ষা, শ্বাসপ্রশ্বাস ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গের স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদে বিপদের কারণ হতে পারে। চিকিৎসা মহলে এই সিদ্ধান্তকে 'চরম বিপজ্জনক এবং সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়' বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সৌন্দর্যের পিছনে দৌড়াতে গিয়ে মানুষ কতদূর যেতে পারে? কোথায় থামার সীমা? অনেকে মন্তব্য করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ও বিনোদন দুনিয়ার চাপ মানুষকে অবাস্তব দেহ–মানদণ্ডের কাছে বন্দি করে রেখেছে। কেউ কেউ বলছেন, এই ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে যে নিখুঁত হওয়ার সামাজিক চাপ মানুষকে কত ভয়ংকর পথে ঠেলে দিতে পারে।
অন্যদিকে, মহিলার এই সিদ্ধান্তকে অনেকে 'নিজের শরীরের উপর অধিকার' বলে সমর্থনও করছেন। তাঁদের যুক্তি, যদি কেউ নিজের ইচ্ছেমতো দেহগঠন পরিবর্তন করতে চান, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। তবে মনোবিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এমন সিদ্ধান্ত সাধারণত প্রবল মানসিক চাপ, সামাজিক তুলনা, আত্মবিশ্বাসের অভাব ও বিকৃত দেহ–চিন্তার ফল।
