আজকাল ওয়েব ডেস্ক: দুর্গাপুজোর শুরুতেই হয় বোধন। অন্য দেবদেবীর পুজোর ক্ষেত্রে বোধনের ততটা গুরুত্ব না থাকলেও দুর্গাপুজোর বোধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেন জানেন? কেনই বা পুজো শুরু আগে এই নিয়ম পালন করা হয়?

‘বোধন’ কথার মানে হচ্ছে জাগরণ। অর্থাৎ দেবীর নিদ্রাভঙ্গের উদ্যোগ। আসলে হিন্দু ধর্মে বছরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। একটি দক্ষিণায়ন এবং অপরটি উত্তরায়ন। দক্ষিণায়নে দেবতাদের রাত্রি। আর উত্তরায়ন মানে দিন। শাস্ত্র মতে, শরৎকাল হল যে কোনও দেবদেবীর নিদ্রাকাল। পৃথিবীর এক বছরের সমান স্বর্গের একদিন। তাই সূর্যের উত্তরায়নকে বলা হয় দেবতাদের দিন এবং দক্ষিণায়নকে বলা হয় দেবতাদের রাত্রি।

বাংলায় দেবীর বোধনের সঙ্গে আবার রামায়ণের যোগ রয়েছে। বলা হয়, রাবণের বিনাশের জন্য রামচন্দ্র শরৎকালে দেবীর আরাধনা করেছিলেন। যা নিয়ম অনুযায়ী ‘অকাল’। যে কারণে এই পুজোকে ‘অকালবোধন’ বলা হয়। শারদীয় পুজোয় ষষ্ঠীতে বোধন-মন্ত্রে এই বিষয়ে উল্লেখও রয়েছে। ভগবান শ্রী রাম অকালে মা দুর্গাকে পুজো করেছিলেন। তাই পুজো করার আগেই বোধন করে দেবীর নিদ্রা ভঙ্গ করেছিলেন তিনি।

আজকাল যতই মহালয়া থেকে পুজোর উদ্বোধন করা হোক না কেন দুর্গাপুজো শুরু হয় ষষ্ঠী থেকে। দেবীর বোধন থেকে শুরু হয় মায়ের আরাধনা। ষষ্ঠী তিথিতে মা দুর্গার মুখের আবরণ উন্মোচন করাই এই দিনের প্রধান কাজ হিসাবে গন্য হয়। এছাড়া অন্য নিয়ম হিসেবে বোধনের আগে থাকে কল্পারম্ভ এবং বোধনের পরে আমন্ত্রণ এবং অধিবাস নামে আরও কয়েকটি ছোট নিয়ম পালন করা । মনে করা হয়, বোধনের মাধ্যমে প্রতিমার মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এই নিয়মের পরেই সকল সকল দেব-দেবী এবং তার সঙ্গে মহিষাসুরেরও পুজো করা হয়।

আগামীকাল ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পুজো। যদিও তিথি অনুযায়ী আজ পঞ্চমীতেই শুরু হয়ে যাবে ষষ্ঠী পুজোর রীতি। দেবীর বোধনের পর একে একে চলবে পুজোর সমস্ত নিয়ম। দশমীতে বিসর্জন হবে মায়ের।