আজকাল ওয়েব ডেস্ক: ভার্চুয়াল অটিজম অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার প্রকৃত অর্থে কোন রোগ নয়।অটিজম এক ধরনের নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার। যেখানে শিশুর সামাজিক ভাব আদান-প্রদানের ক্ষমতা কম থাকে ও ব্যবহারে ইন্দ্রিয়গত সমস্যা বেশি থাকে। এর কোন নির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা যায় না। তবে জিনগত ও পরিবেশগত এক বা একাধিক কারণের মিলিত প্রভাবে এই সমস্যা দেখা যায়।
ভার্চুয়াল অটিজমে সমস্যাগুলি অনেকটা অটিজিমের মতোই ,যেমন -- ছটফটে ভাব, চোখে চোখে না তাকানো, বাচ্চাদের সঙ্গে মেশার ক্ষমতা কম এবং কথাও কম বলা।
কিন্তু ভার্চুয়াল অটিজমের ক্ষেত্রে খুব ছোট বয়সে যেমন দু বছরের নিচে প্রচুর পরিমাণে মোবাইল দেখার একটা ইতিহাস পাওয়া যায়। খুব অভিজ্ঞ চোখে অনেক সময় কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্য ধরা পড়ে।
আসলে শিশুর ভেতরের সামাজিক আদান-প্রদানের ক্ষমতা কারো কম, কারো বেশি। যখন অটিজম বলে ডায়াগনোসিস করা হয় তখন ধরে নিতে হবে তার চারিপাশের পরিবেশগত উদ্দীপনা একটা স্বাভাবিক মানের মধ্যে থাকবে।
ভার্চুয়াল অটিজমে এই পরিবেশগত উদ্দীপনা অনেকটাই কম থাকে। ফলে যাদের স্বাভাবিক সামাজিক আদান-প্রদানের ক্ষমতা কমের দিকে, কিন্তু হয়তো খুব কম নয় তাদের মধ্যেও অটিজমের লক্ষণ দেখা যায়। যাদের এই ক্ষমতা খুব কম, তাদের ক্ষেত্রে তো অটিজম হয়ই।
এখনো কোনো বড় নিরীক্ষা এই বিষয়ে হয়নি। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, যদি দ্রুত মোবাইল বা টিভি দেখা বন্ধ করা যায় ও শিশুকে স্বাভাবিক আদান-প্রদানের মধ্যে ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেকটা উন্নতি হয়। অনেক সময় স্বাভাবিকও হয়ে যেতে পারে।
কিন্তু এটাও ঠিক এই বয়সটা শিশুর মস্তিষ্ক তৈরি হওয়ার বয়স। এই সময় যদি তার যথাযথ বিকাশ না ঘটে এবং সঠিক রাস্তায় আনতে দেরি হয় তাহলে ভবিষ্যতে তার বিকাশ ও মানসিক সুস্থতার পথে বাধা হবে।
যদি সন্দেহ হয়, শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত এবং স্ক্রিন এক্সপোজার বন্ধ করার সাথে সাথে যথাযথ চিকিৎসা যেমন, অকুপেশনাল থেরাপি ও স্পিচ থেরাপি শুরু করা উচিত। সমস্যা কমে গেলে, বন্ধ যেকোনো সময় করা যেতে পারে, কিন্তু চিকিৎসায় দেরি করা অনুচিত।
তবে সবচেয়ে জরুরী হলো সমস্যাটা এড়ানো। তাই দু'বছরের নিচে একদম মোবাইল দেওয়া উচিত নয়। তার পরেও ছ'বছর পর্যন্ত সারা দিনে আধ থেকে এক ঘন্টা ধীরগতির ভিডিও দেখা যেতে পারে। এই সময় বড়রা তার মানে বুঝিয়ে দেবার জন্য পাশে থাকা উচিত।
চারপাশের মানুষের সঙ্গে কথা বা মেলামেশা যোগাযোগ গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজন। পারিবারিক, মানসিক, সামাজিক ও শারীরিক বিকাশের সামঞ্জস্য থাকলে তবেই শিশুর পূর্ণ বিকাশ হওয়া সম্ভব।
তাই ভয় নয়। কিন্তু সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সামান্য সমস্যা মনে হলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। অহেতুক অপেক্ষা করে সমস্যা বাড়িয়ে তোলার থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
