আজকাল ওয়েবডেস্ক: আপনি প্রথমে কী দেখলেন? একটি খরগোশ, না কি একটি হাঁস? এই সরল প্রশ্নটির উত্তরই নাকি বলে দিতে পারে আপনি কতটা সৃজনশীল! খটকা লাগছে তো? আসলে এই রহস্য লুকিয়ে আছে একটি অপটিক্যাল ইলিউশন বা ধাঁধায়। এই বিখ্যাত ছবিটি নিয়ে মনোবিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর গবেষণা চালিয়ে গিয়েছেন। আর সেই গবেষণা থেকেই উঠে এসেছে কিছু চমকপ্রদ তত্ত্ব।
১৮৯২ সালে জার্মানির জনপ্রিয় ব্যঙ্গচিত্র পত্রিকা ফিলেজেন্ডে ব্লাটার-এ প্রথম প্রকাশিত হয় এই দ্ব্যর্থবোধক ছবিটি। ছবিটিকে কেউ খরগোশ হিসেবে দেখেন, আবার কেউ ছবিতে দেখেন হাঁস। ছবিটির এই দ্ব্যর্থতা নিয়েই মনোবিজ্ঞানী জোসেফ জাস্ট্রো ১৮৯৯ সালে একটি বিখ্যাত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তিনি দেখান, যাঁরা সহজেই একসঙ্গে খরগোশ ও হাঁস দু’টিই দেখতে পান, তাঁদের সৃজনশীলতা ও চিন্তাশক্তি তুলনামূলকভাবে বেশি।
কী বলছে আধুনিক গবেষণা?
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টার গবেষক কাইল ম্যাথিউসন ফের একবার ছবিটি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর দাবি, এমন বিভ্রমজনিত ছবির ক্ষেত্রে সাধারণত মস্তিষ্কের প্রাইমারি ভিজ্যুয়াল কর্টেক্স, সোমাটোসেন্সরি কর্টেক্স এবং প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স সক্রিয় হয়। এই অংশগুলোই নির্ধারণ করে আমরা কী দেখছি, কীভাবে সেটিকে ব্যাখ্যা করব এবং পরিবর্তনশীল তথ্যের সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নেব। তাই এই ধরনের ছবি বা বিভ্রম শুধুই দৃষ্টির খেলা নয়। এটি আমাদের মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতাকে তুলে ধরে।
আপনি কী প্রথমে দেখলেন?
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, যদি প্রথমে খরগোশ দেখেন: আপনি সৃজনশীল, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং নতুন চিন্তা করতে ভালবাসেন। বিজ্ঞানীদের একাংশের মত, যাঁরা প্রথমেই খরগোশ দেখতে পান তাঁদের মস্তিষ্কের বাম দিক বেশি সক্রিয়।
যদি প্রথমে হাঁস দেখেন: আপনি বিশ্লেষণাত্মক, পর্যবেক্ষণক্ষম, বাস্তববাদী এবং মস্তিষ্কের ডান দিক বেশি সক্রিয়।
তবে স্বাভাবিক ভাবেই এই ফলাফল একেবারে চূড়ান্ত নয় কেবল একটি সাধারণ ধারণা মাত্র। তবু, আপনি প্রথমে কী দেখেছেন—খরগোশ না হাঁস? নিজের উত্তরে খানিকটা চেনা যাবে নিজেকেই।
