জামাকাপড় আউট অফ স্টক শুনেছেন, কিন্তু কখনও শুনেছেন কোনও দেশে বিবাহযোগ্য পুরুষ আউট অফ স্টক? হ্যাঁ, এমনটাই ঘটেছে এই দেশে। শুধু তাই নয়, এই 'খরা' এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে ঘণ্টা প্রতি স্বামী ভাড়া মিলছে। ভাবছেন কোন দেশে এমন আজগুবি কাণ্ডকারখানা চলছে? লাটভিয়ায়।
এই ছোট্ট ইউরোপীয় দেশে বর্তমানে বিবাহযোগ্য পুরুষ 'কম পড়িয়াছে'। লাটভিয়ায় প্রায় ১৫.৫ শতাংশ বেশি মহিলা রয়েছেন পুরুষদের তুলনায়। আর এই কারণেই এই দেশের মহিলারা ঘণ্টা প্রতি তাঁদের স্বামীকে ভাড়া দিচ্ছেন। যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরা টাকার বিনিময়ে ভাড়া নিচ্ছেন।
রোজকার কাজের জন্যই মূলত এই 'স্বামী ভাড়া দেওয়া'র ব্যবসা চলছে লাটভিয়ায়। চেনা সমীকরণ বদলাচ্ছে। মহিলাদের বদলে পুরুষরা সংসার সামলাচ্ছেন। যাঁরা ঘণ্টা প্রতি স্বামী ভাড়া নিচ্ছেন তাঁরা মূলত বাড়ির কল, মেরামতের কাজ, আসবাবপত্র এধার ওধার করার জন্যই ভাড়া নিচ্ছেন। এ যেন এক অদ্ভুত ধরনের খরা!
একাধিক প্ল্যাটফর্ম যেমন কোমান্ডা ২৪ বা রেমন্টডার্বি ডট ফোরের তরফে এক ঘণ্টায় স্বামী ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের প্রয়োজন তাঁরা এমন প্ল্যাটফর্ম থেকে ভাড়া নিচ্ছেন।
কোনও কোনও সাইটের তরফে আবার এই পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে 'মেন উইথ গোল্ডেন হ্যান্ডস'। না, এই পরিষেবা কেউ প্রেম করা বা দাম্পত্য সুখ পাওয়ার জন্য মোটেই নিচ্ছেন না। বরং টিভি লাগানো, কাঠের কাজ, বাথরুমের কল খারাপ হলে বা অন্যান্য প্রয়োজনেই নিচ্ছেন। আর সেই কারণেই গোটা বিষয় দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছেন সকলেই। এই পরিষেবাগুলোতে ফোন করে স্বামী ভাড়া নিতে চাইলে জানালে মাত্র এক ঘণ্টায় 'স্বামী' বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে। গিয়ে গল্প, ঘোরাঘুরি নয়, সটান লেগে পড়ছেন বাড়ির কাজে। কখনও কেউ দেওয়াল রং করছেন, কেউ আবার কোনও কিছু মেরামত করছেন।
এই দেশের অনেক মহিলারাই বাইরে যাচ্ছেন কেবল প্রেমিক খুঁজতে। যাঁরা 'সেটেল' হতে, অর্থাৎ বিয়ে করতে চাইছেন, তাঁরা ভিন্ন দেশে গিয়ে স্বামীর খোঁজ করছেন।
ইউরোস্ট্যাটের মতে, ইউরোপের সমস্ত দেশের মধ্যে লাটভিয়ার সেক্স রেশিও সব থেকে খারাপ। পুরুষ-মহিলার সংখ্যার এই ফারাক দিন দিন আরও বাড়ছে। এই ফারাক সব থেকে বেশি দেখা যাচ্ছে বর্ষীয়ান নাগরিকদের মধ্যে। পঁয়ষট্টি বছর বা তার বেশি বয়সের মহিলারা পুরুষদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক। বলাই বাহুল্য, এই দেশের পুরুষদের আয়ুষ্কাল বেশ কম মহিলাদের তুলনায়। এর অন্যতম কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় ধূমপান।
