মুখের ত্বকের যেমন পরিচর্চা প্রয়োজন, তেমনই মুখের সবচেয়ে কোমল অংশ ঠোঁটেরও বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে শীতকালে শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া ঠোঁটের সমস্যায় ভোগেন কম-বেশি সকলেই। অনেকের আবার সারা বছরই শুষ্ক থাকে ঠোঁট। সঠিকভাবে যত্ন না নিলে লাগাতার দূষণ, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির কারণে ঠোঁটের বেহাল দশা হতে বেশি সময় লাগে না।

ঠোঁটের যত্ন  নেওয়ার জন্য কয়েকটি পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। যেমন, ঠোঁট নিয়মিত স্ক্রাব, ময়শ্চারাইজ করতে হবে। ঠোঁটকে হাইড্রেটেড রাখাও জরুরি। আর এই সব পরিচর্চার জন্য ব্যবহার করতে হবে সঠিক প্রোডাক্ট। ঘরোয়া উপায়েও সহজেই ঠোঁটের যত্ন নিতে পারেন।

সপ্তাহে দু’বার এক্সফোলিয়েটঃ মরা ত্বকের স্তর না সরালে ঠোঁট সবসময় রুক্ষ থাকবে। তাই হালকা স্ক্রাব ব্যবহার করা জরুরি। বাড়িতেই খুব সহজে চিনি ও মধুর মিশ্রণে একটি নরম স্ক্রাব তৈরি করা যায়। ঠোঁটে আলতোভাবে ঘষে ১ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। এতে ঠোঁট নতুন, গোলাপি ও মসৃণ হয়ে ওঠে।

প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার ব্যবহারঃ শীতে লিপ বাম লাগানো বাধ্যতামূলক, তবে রাসায়নিক কম এমন বাম বেছে নিন। পাশাপাশি ঘরোয়া উপাদানগুলো অত্যন্ত কার্যকর। যেমন মধু প্রাকৃতিক হিউমেকট্যান্ট, ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখে। জ্বালা কমায়, আর্দ্রতা বাড়ায় অ্যালোভেরা জেল। ঠোঁটে সারা রাত নারকেল তেল লাগালে ভেতর থেকে নরম হয়। পুরনো দিনের পরীক্ষিত সমাধান ঘি ঠোঁটের ফাটল সারাতে অসাধারণ কাজ করে। দিনে ২–৩ বার ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করলে ঠোঁট ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে।

বাইরে বেরোলে এসপিএফ যুক্ত লিপ বামঃ অনেকেই জানেন না, শীতের রোদ ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে তোলে। তাই দিনের বেলায় এসপিএফ যুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করুন। মেন্টহল বা অতিরিক্ত সুগন্ধি থাকা বাম এড়িয়ে চলাই ভাল, কারণ এগুলো ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে।

ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখুনঃ শীতের হিটার বা শুকনো বাতাসে ঘরের আর্দ্রতা অনেক কমে যায়। এতে শুধু ঠোঁট নয়, পুরো ত্বকই রুক্ষ হয়ে পড়ে। রাতে ঘুমানোর সময় ঘরে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে ঠোঁট সারাক্ষণ ভিজে এবং নরম থাকে।

পর্যাপ্ত জল পানঃ অনেকেই ঠান্ডায় জল কম পান করেন। কিন্তু শরীরের ভেতর জল কম থাকলে প্রথমে তার প্রভাব দেখা যায় ঠোঁটে। দিনে ৬–৮ গ্লাস জল পান করলে ঠোঁট স্বাভাবিকভাবেই হাইড্রেটেড থাকে।

ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো বর্জনঃ ঠোঁট শুকোলে অনেকেই অভ্যাসবশত ঠোঁট চেটে নেন। এটি সবচেয়ে ক্ষতিকর অভ্যাস। লালা শুকিয়ে ঠোঁট আরও বেশি ফাটতে থাকে। এছাড়া ঠোঁট কামড়ানো বা বারবার খসখসে অংশ ফাটা থেকেও দূরে থাকুন।

মনে রাখবেন, শীতের কড়া ঠান্ডায় ঠোঁট শুষ্ক হওয়া খুব স্বাভাবিক, কিন্তু সঠিক যত্ন নিলে এটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।