বলিউডে যখন ‘গ্ল্যামার’ কথাটার আধুনিক সংজ্ঞা তৈরি হচ্ছিল, তখন তার নেতৃত্বে ছিলেন একাই, তাঁর নাম জিনাত আমান। জন্মদিনে তাঁকে মনে করা মানে ভারতীয় সিনেমার এক যুগকে শ্রদ্ধা জানানো। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক খেতাবজয়ী থেকে শুরু করে বলিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের একজন হয়ে ওঠা, জিনাত আমান শুধু নায়িকা নন, তিনি নিজেই এক সাংস্কৃতিক বিপ্লব।
2
8
১৯৭০ সালে ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া এবং পরে মিস এশিয়া প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল খেতাব জিতে ভারতীয় বিনোদন জগতে তিনি নিয়ে আসেন আত্মবিশ্বাসী, বিশ্বদৃষ্টিসম্পন্ন এক নতুন নারীকণ্ঠ। প্রথম দিকের কয়েকটি ছোট চরিত্রের পর তাঁর ভাগ্য বদলে যায় যখন দেব আনন্দ তাঁকে কাস্ট করেন ‘হরে রামা হরে কৃষ্ণা’ ছবিতে। সেই এক চরিত্র তাঁকে রাতারাতি তারকাখ্যাতির শিখরে তুলে দেয়।
3
8
সাতের দশকে তিনি ছিলেন ফ্যাশনের ভাষা, স্বাধীনচিন্তার প্রতীক, আর বলিউডের সবচেয়ে আধুনিক নারীচরিত্রের মুখ। যাদোঁ কি বারাত, রোটি কাপড়া অউর মকান, হুম কিসি সে কম নাহিন -সব জায়গাতেই তিনি ছিলেন আগুনের মতো আত্মবিশ্বাসী, নির্ভার গ্ল্যামারাস আর ভীষণ সমসাময়িক।
4
8
‘ডন’-এ রোমার চরিত্রে তাঁর স্টাইল আজও রেফারেন্স হয়ে আছে, আর সত্যম শিবম সুন্দরম-এ তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে গ্ল্যামারের ওপরে তাঁর অভিনয় আরও গভীর। এই ছবির জন্য তিনি পান ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন।
5
8
আটের দশকে তিনি হয়ে ওঠেন ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত নায়িকাদের একজন। অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, শশী কাপুর, বিনোদ খান্না সবাইয়ের সঙ্গে তাঁর জুটি মানেই ছিল বক্স অফিসে সাফল্য। দোস্তানা, লাওয়ারিস, ইনসাফ কা তরাজু, আলিবাবা ঔর চল্লিশ চোর...প্রতিটি ছবি তাঁর লিগ্যাসিকে আরও শক্ত করে।
6
8
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মোকাবিলা করেছেন নির্যাতন, সম্পর্ক ভাঙন, হতাশা, যে অভিজ্ঞতা যে কোনও মানুষকে ভেঙে দিতে পারে। কিন্তু জিনাত আমান ভেঙে পড়েননি। নিজেকে বারবার গড়ে তুলেছেন নতুন করে। এটাই তাঁকে আরও অসাধারণ করে তোলে।পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য কিছু বছর বিরতি নিলেও, পরে তিনি যখন ফিরলেন, তখনও তাঁর উপস্থিতি ছিল একইরকম মর্যাদাপূর্ণ।
7
8
ভোপাল এক্সপ্রেস, বুম, আগলি অউর পাগলি, ডন্নো ওয়াই… না জানে কিউঁ, পানিপথ। জিনাত বেছে নিয়েছেন এমন চরিত্র, যা তাঁর বদলে যাওয়া বয়স ও শিল্প ভাবনার সঙ্গে মানানসই। থিয়েটার, ওয়েব সিরিজ, ফেস্টিভ্যাল ফিল্ম -সব জগতেই তিনি রেখে গেছেন নিজের ছাপ।
8
8
তাঁকে ‘বলিউডের প্রথম সেক্স-সিম্বল’ বলা হলেও তিনি নিজের পরিচয়কে কখনও সেই এক লেবেলে সীমাবদ্ধ হতে দেননি। তাঁর স্টাইল, স্পিরিট, বিশ্বমানসিকতা আজও অনুপ্রেরণা মেলে বহু অভিনেত্রীকে। নানা জরিপে তিনি বারবার জায়গা পেয়েছেন ‘সর্বকালের সেরা অভিনেত্রীদের’ তালিকায়।