আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে। তারপর থেকেই দফায় দফায় উত্তাল বাংলাদেশ। সর্বভারতীয় এবং বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হাসিনার সাজা ঘোষণার পর থেকেই দফায় দফায় উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশ। দেশের নানা জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার, লাঠিচার্জ, খুনের ঘটনা ঘটেছে।
হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার আগে থেকেই আওয়ামী লিগের কর্মী সমর্থকরা নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। সে দেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ঐ ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আজকাল ডট ইন। তবে ঐ ভিডিও সোমবারের উত্তাল বাংলাদেশের, দাবী তেমনটাই। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করছে এবং লাঠিচার্জ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
রাত পর্যন্ত উত্তেজনা জারি ছিল ধানমন্ডি এলাকাতেও। সোমবার, ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয় ধানমন্ডির বাড়ির সামনে। যদিও পুলিশ জমায়েত ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে খবর বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের বাধা দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কিও হয়। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীরা সোমবার ধানমন্ডির বাড়ি নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করেছিল। মুজুবের বাড়ির সামনে সেনা পাহারা ছিল যে কোনও ধরনের অশান্তি এড়াতে, সূত্রের খবর তেমনটাই।
সোমবার রায় ঘোষণার পর থেকে, বাংলাদেশের একাধিক জায়গায় অশান্তি, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বাস, স্কুল, থানাতেও আগুন লাগানো হয়েছে বলেছে বাংলাদেশি গণমাধ্যম সূত্রে খবর। সূত্রের তথ্য, অশান্তি, বিক্ষোভের মাঝেই প্রাণ গিয়েছে দু'জনের। ঢাকা এবং বরিশালে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে তথ্য।
সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে ভারতে আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ করেন, এই রায় এসেছে ‘একটি অনির্বাচিত সরকারের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত রিগড ট্রাইব্যুনাল’ থেকে, যার মূল লক্ষ্য তাঁর দল আওয়ামী লিগকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দুর্বল করে দেওয়া।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলনের সময়ে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরপরই প্রকাশিত বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহম্মদ ইউনুসের বিশৃঙ্খল, সহিংস, সামাজিক ভাবে পিছিয়ে দেওয়া প্রশাসন কোটি কোটি বাংলাদেশিকে কোনওভাবেই বোকা বানাতে পারবে না। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার এই প্রচেষ্টা তারা বুঝে গেছে।’ বঙ্গবন্ধুর মেয়ের ফাঁসি, বাংলাদেশেই মানবতাবিরোধী অপরাধে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা দায়ের হয়েছিল।
হাসিনা আরও বলেন, 'যে তথাকথিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিচার পরিচালনা করেছে, তার কখনওই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য ছিল না। এমনকী, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সম্পর্কে প্রকৃত সত্য উদঘাটনেরও কোনও চেষ্টা করেনি ট্রাইব্যুনাল।’
