১। রাজস্থানের আমের ফোর্ট থেকে শুরু করে কাজিরাঙার জঙ্গল সাফারি- হাতির পিঠে চড়ে রাজকীয় ভঙ্গিতে ভ্রমণের দৃশ্য পর্যটকদের কাছে অতি জনপ্রিয়। পর্যটনের ব্রোশিওরে একে ‘ঐতিহ্য’ বলে চালানো হলেও, জীববিদ্যা ও প্রাণীবিজ্ঞান কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাতির পিঠে ভারী ওজন চাপানো আসলে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এক নির্মম অত্যাচার।
2
6
২। সাধারণ মানুষের ধারণা, হাতির মতো বিশালাকার প্রাণীর পিঠ অত্যন্ত শক্ত এবং তারা সহজেই বহু মণ ভার বহন করতে সক্ষম। কিন্তু হাতির কঙ্কাল পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ঘোড়া বা অন্য ভারবাহী পশুর মেরুদণ্ড কিছুটা সমতল এবং ওজন নেওয়ার উপযোগী হলেও, হাতির মেরুদণ্ডের গঠন স্বতন্ত্র।
3
6
৩। প্রাণীবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, হাতির মেরুদণ্ডের কশেরুকা বা ‘ভার্টিব্রা’-র ওপরের অংশটি (যাকে বলা হয় নিউরাল স্পাইন) অনেকটা সুঁচালো এবং ওপরের দিকে খাড়া হয়ে থাকে। এই হাড়গুলির মূল কাজ হল হাতির বিশাল পাাজর ও পেশিগুলোকে ধরে রাখা, ওপর থেকে বসানো ভারী জিনিসের চাপ সহ্য করা এই হাড়গুলির পক্ষে কঠিন।
4
6
৪। যখনই পর্যটকদের বিনোদনের জন্য হাতির পিঠে ভারী গদি চাপিয়ে তার ওপর একাধিক মানুষকে বসানো হয়, তখন ওই ওজন সরাসরি হাতির মেরুদণ্ডে প্রবল চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে হাড়ের সংযোগস্থলে বা জয়েন্টে ঘর্ষণ হয় এবং নরম টিস্যুগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
5
6
৫। দীর্ঘদিন এই কাজ চলতে থাকলে হাতির পিঠে গভীর ক্ষত, স্পাইনাল ইনজুরি এবং অকাল বার্ধক্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাৎ অবলা প্রাণীগুলি মুখে কিছু বলতে না পারলেও অকথ্য যন্ত্রণা সহ্য করে।
6
6
৬। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবীদেরা বারবার সতর্ক করছেন যে, গঠনগতভাবেই হাতি পিঠ ভার বহনের উপযুক্ত নয়। এই সত্যটি যত দ্রুত অনুধাবন করা যাবে, ততই এই নিরীহ বিশাল প্রাণীটির জন্য মঙ্গল। তাই অবিলম্বে হাতির পিঠে চড়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ডাক দিচ্ছেন তাঁরা।