আজকাল ওয়েবডেস্ক: দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে আমাদের ওঠাবসা করতে হয়। এদের মধ্যে এমন অনেকেই থাকেন যারা কলহ বা বিতর্কে জড়িয়ে অন্যকে উত্তেজিত করে তোলার চেষ্টা করেন। কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে, কখনও বা নিজের অজান্তেই এমন পরিস্থিতি তৈরি করেন যাতে মাথা ঠান্ডা রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু উত্তেজনার মুহূর্তে মেজাজ হারালে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। আবার রাগ নিজের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে নিজেকে সামলে নেওয়া যায়, সেই বিষয়ে মনোবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বাতলে দিয়েছেন কিছু সহজ অথচ কার্যকরী উপায়। 

১. গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস (ডিপ ব্রিদিং): যখন কেউ আপনাকে রাগানোর চেষ্টা করছে, সেই মুহূর্তে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে প্রথমে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন, কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং তারপর মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এই প্রক্রিয়া কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করলে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং উত্তেজনা প্রশমিত হয়। মনোবিদদের মতে, গভীর শ্বাস মস্তিষ্ককে শান্ত করার পাশাপাশি পরিস্থিতি থেকে সাময়িকভাবে মনোযোগ সরাতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে সঙ্গে সচেতনভাবে নিজের মনোযোগ ওই ব্যক্তি বা ঘটনার থেকে সরিয়ে অন্য কোনও গঠনমূলক বা ইতিবাচক বিষয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। 

২. সরে যান (টেকিং এ ব্রেক): যদি বুঝতে পারেন যে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং আপনার পক্ষে মাথা ঠান্ডা রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ছে, তাহলে সেই স্থান বা আলোচনা থেকে সাময়িকভাবে নিজেকে সরিয়ে নিন। এটি দুর্বলতার লক্ষণ নয়, বরং বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। কয়েক মিনিটের জন্য একা থাকুন, একটু হেঁটে আসুন বা জল পান করুন। এই সংক্ষিপ্ত বিরতি আপনাকে পরিস্থিতিকে নতুন করে মূল্যায়ন করতে এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করবে। পরে শান্ত মাথায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা বা সমাধান খোঁজা অনেক সহজ হবে।

৩. সহানুভূতির সঙ্গে পরিস্থিতি বিচার (এম্প্যাথেটিক অ্যাপ্রোচ): অনেক সময় যে ব্যক্তি আপনাকে রাগানোর চেষ্টা করছেন, তিনি হয়তো নিজেও কোনও হতাশা, মানসিক চাপ বা ভুল বোঝাবুঝির শিকার। তাঁর আচরণের পেছনের সম্ভাব্য কারণগুলি বোঝার চেষ্টা করলে আপনার পক্ষে সহানুভূতিশীল হওয়া সহজ হবে। নিজেকে তাঁর জায়গায় কল্পনা করে দেখুন। এর ফলে আপনার বিরক্তি বা ক্রোধ কিছুটা হলেও কমতে পারে। একইসঙ্গে, আবেগের বশে কোনও মন্তব্য বা কাজ না করে যুক্তির আশ্রয় নিন। অপর পক্ষের কথায় উত্তেজিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় তার বক্তব্যের অসারতা বা অযৌক্তিক দিকগুলি তুলে ধরুন, যদি পরিস্থিতি আলোচনার অনুকূলে থাকে। মনে রাখবেন, মূল লক্ষ্য হল নিজের শান্তি বজায় রাখা, বিতর্কে জয়ী হওয়া নয়