আজকাল ওয়েবডেস্ক: মেয়েদের বাহুমূলের গন্ধেই নাকি আকৃষ্ট হন পুরুষরা। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এমনই তত্ত্ব উঠে এল একটি জাপানি গবেষণায়।
জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এই গবেষণায় জানানো হয়েছে মেয়েদের ঘামের গন্ধেই নাকি প্রেমের ইঙ্গিত পান পুরুষরা! গবেষকরা জানাচ্ছেন, নারীদের বাহুমূলের ঘ্রাণ পুরুষদের মনোভাব এবং আবেগে প্রভাব ফেলতে পারে। শুধু তাই নয়, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এই গন্ধ পুরুষদের মন শান্ত করে। এমনকী সংশ্লিষ্ট নারীকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে পুরুষদের কাছে।
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?
গবেষক দলের মতে, মেয়েদের শরীরের ঘ্রাণ তাঁদের ঋতুচক্র অনুযায়ী বদলায়। ডিম্বাণু নির্গমন বা ওভুলেশনের সময় নারীর শরীর থেকে নির্গত বিশেষ এক রাসায়নিক মিশ্রণ পুরুষদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়। এই ‘ঘামের ঘ্রাণ’ পুরুষদের যেমন পছন্দ। তেমনই এই গন্ধে পুরুষদের মুখে ফুটে ওঠা স্ট্রেস মার্ক কমে, অর্থাৎ মানসিক চাপও কমাতে পারে এই ঘ্রাণ!
আরও পড়ুন: ভাইরাল ‘আপত্তিকর’ ভিডিও! দশ নায়িকার গোপন মুহূর্ত ফাঁস হওয়ায় কম্পন বলিউডে
বিজ্ঞানীদের দাবি, তিনটি রাসায়নিকই নাকি মোক্ষম অস্ত্র। গবেষণায় ২০ জন নারীর শরীর থেকে বাহুমূলের ঘাম সংগ্রহ করা হয় মাসের বিভিন্ন সময়ে। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে সেই ঘামের রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনটি নির্দিষ্ট যৌগ চিহ্নিত করেন বিজ্ঞানীরা। এই তিনটি যৌগ ওভুলেশনের সময় নারীদেহে অনেকটাই বেড়ে যায়। বিজ্ঞানীদের মতে ঘামে ওই যৌগগুলো যুক্ত করার পর সেই ঘ্রাণ পুরুষদের কাছে বেশি আনন্দদায়ক।
বিজ্ঞানীদের কাছে সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য, এই ঘ্রাণ শুঁকে শুধু মন ভরে ওঠে না, শরীরও শান্ত হয়। যখন মানসিক চাপ বেড়ে যায় তখন মানুষের লালায় বিশেষ কিছু জৈবিক যৌগ পাওয়া যায়। একে বায়োমার্কার বলে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী পুরুষদের লালা পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ঘামের সেই গন্ধে স্ট্রেসের এই বায়োমার্কারগুলি হ্রাস পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রাণীজগতে ‘ফেরোমোন’ নামে এক বিশেষ গন্ধ খুবই সুপরিচিত। বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে শুরু করে স্তন্যপায়ী প্রাণী, অনেকেই ঘ্রাণের মাধ্যমে সঙ্গী বেছে নেয় বা নিজের এলাকা চিহ্নিত করে। মানুষের ক্ষেত্রেও কি এমন কিছু ঘটছে? সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গবেষক অধ্যাপক কাজুশিগে তোউহারা। অধ্যাপক কাজুশিগের নেতৃত্বেই এই গবেষণা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না, এই যৌগগুলি নিখাদ ফেরোমোন কি না। তবে এগুলি ‘ফেরোমোনের মতো’ আচরণ করছে তা বলাই যায়।”
তবে গবেষক জানিয়েছেন, মোটেই সহজ ছিল না কাজটা। গবেষক দলের অন্য এক সদস্য নোজোমি ওহগি জানিয়েছেন, “২০ জন মহিলার বগলের ঘাম সঠিক সময়ে সংগ্রহ করার জন্য প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা, মাসিক চক্রের অবস্থা ইত্যাদি নিরন্তর পর্যবেক্ষণ করতে হয়েছে। এক একজনের জন্য লেগেছে পুরো এক মাস।” গবেষকরা এখন আরও বেশি সংখ্যক মানুষের উপর এই গবেষণা করতে চান। ভবিষ্যতে তাঁরা দেখতে চান, এই ঘ্রাণ মস্তিষ্কের কোন অংশে কতটা প্রভাব ফেলে।
