আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রাচীন সভ্যতা নিয়ে গবেষণা করলে অনেক সময় এমন বেশ কিছু দর্শন সম্পর্কে জানতে পারা যায় যা বর্তমানেও মানুষকে সাহায্য করতে পারে। ‘স্টোইসিজম’ তেমনই একটি দর্শন। এটি প্রাচীন গ্রিক ও রোমান দর্শনের একটি প্রভাবশালী শাখা, যা জীবনের অর্থ ও সুখ খুঁজে পাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। স্টোইক দর্শনের অনুসারীরা আবেগ এবং কামনা-বাসনাকে নিয়ন্ত্রণ করার উপর জোর দেন এবং যুক্তি ও বাস্তবতার নিরিখে জীবনকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেন। কীভাবে এই দর্শন থেকে আত্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানা যায়? 

১.  ইচ্ছাশক্তির অনুশীলন: স্টোইক দর্শনের মূল ভিত্তি হল আমাদের চিন্তাভাবনার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা। কোনও ঘটনা বা আবেগকে যেন আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সত্য বলে মেনে না নিই, সেই বিষয়ে সচেতন থাকা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে সেগুলোকে যাচাই করার অভ্যাস করাই হল ইচ্ছাশক্তির অনুশীলন। এর মাধ্যমে আমরা আবেগের বশে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ করতে পারি।

২.  নিয়ন্ত্রণ: স্টোইকরা বিশ্বাস করতেন যে আমাদের জীবনে কিছু জিনিস আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে (যেমন আমাদের নিজস্ব চিন্তা, বিচার, ইচ্ছা) এবং কিছু জিনিস আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই (যেমন বাহ্যিক ঘটনা, অন্যের মতামত, ভাগ্য)। আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এটা বোঝা জরুরি যে আমাদের মনোযোগ কেবল সেই জিনিসগুলোর উপরই দেওয়া উচিত যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই।

৩.  প্রতিকূলতার পূর্বাভাস: এর অর্থ হল খারাপ বা প্রতিকূল পরিস্থিতির কথা আগে থেকে চিন্তা করে রাখা। এর মাধ্যমে মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া যায় এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে হতভম্ব না হয়ে বরং শান্তভাবে মোকাবিলা করা যায়। এটি আমাদের উপলব্ধি করতে সাহায্য করে যে জীবনের অনেক কিছুই আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী নাও ঘটতে পারে এবং তার জন্য প্রস্তুত থাকা আত্মনিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

৪.  ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা: স্টোইকরা বিশ্বাস করতেন যে তাৎক্ষণিক ফল বা দ্রুত ফল পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পরিহার করা উচিত। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অর্জনের জন্য ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতা অত্যন্ত জরুরি। জীবনের পথে আসা বাধা এবং বিলম্বকে মেনে নিয়ে অবিচল থাকা এবং নিজের নীতি ও মূল্যবোধের প্রতি দৃঢ় থাকা আত্মনিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ দিক।