কথায় বলে, সবকিছুকে বাগে আনা গেলেও, মনের নিয়ন্ত্রণ সহজ নয়! তাই তো বিচ্ছেদের পর তিক্ততা থাকলেও প্রাক্তনকে ভোলা যায় না। আসলে একসময়ে যে আপনার অনেকটা জুড়ে ছিল, একদিন আচমকাই তাঁকে অপরিচিতর তালিকায় জায়গা দিতে পারেন না অনেকেই। বছরের পর বছর কেটে গেলেও প্রাক্তনকে ভুলতে না পারা, অস্বাভাবিক কিছু নয়! যদিও ধীরে ধীরে মনের কষ্ট কম হতে থাকে। সময় যত গড়াতে থাকেই ততই প্রাক্তনকে মুছে ফেলা যায়। কিন্তু জানলে অবাক হবেন এশুধুই মনের কারসাজি নয়, রয়েছে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যাও। এমনকী ঠিক কতদিনে প্রাক্তনের থেকে পুরোপুরি নিজেকে সরিয়ে নেওয়া যায়, তার হিসাবও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। 

প্রাক্তন সঙ্গীর কাছ থেকে সম্পূর্ণরূপে আবেগগতভাবে বিচ্ছিন্ন হতে প্রায় আট বছর সময় লাগে। গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে মানসিক সংযুক্তির "অর্ধ-জীবন" চার বছর, যার অর্থ ৪ বছর পরে আপনি ৫০ শতাংশ প্রাক্তনের প্রতি টান অনুভব করেন। যা প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যায় আট বছর পর। এর পিছনে ঠিক কী যুক্তি রয়েছে? আসলে প্রেমের সম্পর্ক আপনার মস্তিষ্কে প্রকৃত স্নায়ুপথ তৈরি করে। সংযোগ যত গভীর হয়, এই পথগুলো তত শক্তিশালী হয় এবং স্বাভাবিকভাবেই এগুলো ম্লান হতে তত বেশি সময় লাগে। ফলে বিচ্ছেদ হওয়ার পরও প্রাক্তনকে ভুলতে না পারা দুর্বলতা নয়, এটি জীববিজ্ঞান বলে ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। 

আরও পড়ুনঃ লাগবে না চশমা, আইড্রপেই স্পষ্ট হবে ঝাপসা দৃষ্টি! বিস্ময়কর আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের, কবে থেকে বাজারে মিলবে?

যদি আপনি বছরের পর বছর প্রাক্তনের প্রেমের অনুভূতি অনুভব করেন, তাহলে সেটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। শরীরের মতো মনেরও ক্ষত সারতে খানিকটা সময় লাগে। তাই এই গবেষণাটি মনের নিরাময় প্রক্রিয়াকে বৈধতা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার মতো বেশ কয়েকটি কৌশল প্রাক্তনকে দ্রুত ভুলতে সাহায্য করে। নচেৎ বিচ্ছেদের পর এটি খুবই ধীর প্রক্রিয়া হওয়া স্বাভাবিক বলে মত বিজ্ঞানীদের। 

একথা ঠিকই, প্রাক্তনকে ভুলে যেতে কতদিন লাগবে, তার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। এটি নির্ভর করে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ওপর, সম্পর্ক কত গভীর ছিল এবং ব্রেকআপের কারণের ওপর। কারও কারও ক্ষেত্রে কয়েক মাস লাগতে পারে, আবার কারও বছরের পর বছর। তবে মোটামুটি আট বছরের পর থেকেই প্রাক্তনের প্রতি টান কম অনুভব হতে থাকে। এক্ষেত্রে কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করে দেখতে পারেন। যেমন- যোগাযোগ বন্ধ করুন অর্থাৎ প্রাক্তন সঙ্গীর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ রাখুন, নিজেকে সময় দিন, পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন, নতুন কিছু শুরু করতে পারেন, অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিন, সর্বশেষে পেশাদার সাহায্য নিতে পারেন।