আজকাল ওয়েবডেস্ক: কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা নিয়ে এখনও মানুষের উৎসাহের অন্ত নেই। অবশ্য উৎসাহের কারণও রয়েছে যথেষ্ট। এমন রহস্যময় সভ্যতা পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি আছে কিনা সন্দেহ। সেই মিশরীয় সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য ফ্যারাও তুতেনখামেনের সমাধি। খ্রিস্টপূর্ব ১৩৩২ থেকে ১৩২৩ পর্যন্ত মিশরের শাসনভার সামলেছিলেন তুতেনখামেন। কিন্তু মাত্র ১৮-১৯ বছর বয়সেই মৃত্যু হয় তার। কালের গহ্বরে চাপা পড়ে যায় তাঁর সমাধি। অবশেষে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর সেই হারিয়ে যাওয়া মমি।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে

তুতেনখামেনের সমাধি মিশরীয় সভ্যতার ইতিহাসে এক মাইলফলক। বিপুল পরিমাণ সোনাদানা থেকে শুরু করে প্রাচীন মিশরীয় লিপি, আসবাবপত্র, লেখনী- বহু কিছু পাওয়া যায় সেই সমাধির ভিতর। তুতেনখামেনের মমি পরীক্ষা করে দেখা যায় কার্যত অক্ষত রয়েছে তার মরদেহ। এমন ঘটনা চমকে দিয়েছিল বিজ্ঞানীদের। তাঁর সোনার মুখোশ পৃথিবী বিখ্যাত হলেও ইতিহাসবিদ সালিমা ইকরান সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছেন এমন এক তথ্য যা অনেকেরই অজানা। সালিমার দাবি, এ কথা অনেকেই জানেন না যে তুতেনখামেনের মমি যখন পাওয়া যায় তখন তার পুরুষাঙ্গ উত্থিত অবস্থায় ছিল।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মিশর বিশারদ সালিমা জানান, সাধারন মমি তৈরিতে যে ধরনের উপাদান ব্যবহৃত হত তা বাদেও এক ধরনের বিশেষ কালো চটচটে পদার্থ ব্যবহৃত হয়েছিল তুতেনখামেনের দেহে। পরবর্তীকালে পরীক্ষা করে দেখা যায় এই কালো পদার্থটি আসলে বিটুমিন। পাশাপাশি দেহের এমন কিছু জায়গায় কাটা দাগ দেখা যায় যা অন্য মমিদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না।

সালমা বলেন, “আমার মনে হয় তুতেনখামেন চেয়েছিলেন মৃত্যুর পর যাতে তিনি প্রাচীন মিশরীয় দেবতা ওসিরিস হয়ে জন্মান। জীবনকালে তিনি নিজেকে হোরাস এর প্রতিনিধি বলে মনে করতেন। কিন্তু প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম অনুসারে মৃতদের দেবতা ওসিরিস। তুতেনখামেনের ইচ্ছে ছিল মৃত্যুর পর তিনি সেই দেবতা হবেন।”
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে

প্রাচীন মিশরীয়রা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করতেন। আর্নেই পুনর্জন্মেরও দেবতা ছিলেন ওসিরিস। পাশাপাশি তাঁকে পুনরুজ্জীবন এবং উর্বরতা তথা সন্তানধারণের দেবতা বলেও মনে করা হত। তাই তুতেনখামেনের উত্থিত লিঙ্গ সেই ক্ষমতার প্রতীক বলেই মনে করেন গবেষক। তিনি জানান, নিল নদের বন্যায় যে পলি জমা হত, সেই পলিমাটি কালো রঙের। অর্থাৎ শুধু সন্তানধারণ নয়। শস্য উৎপাদনের দেবতা হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তুতেনখামন। ধারণা গবেষকের। অর্থাৎ জীবন তো বটেই জীবনের পরেও রাজা হতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই আশা থেকেই এত কাণ্ড, দাবি গবেষকের।

তবে কারণ যাই হোক। মৃত্যুর এত বছর পরেও তাঁকে নিয়ে আলোচনা যে হচ্ছে সেটা কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। কাজেই আক্ষরিক অর্থে মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত না হলেও, গবেষণায় বা মানুষের আগ্রহে তুতেনখামেন যে এখনও বেঁচে বর্তে রয়েছেন, এটা জানলে খুশিই হতেন মিশরের ফ্যারাও। হাস্য রসাত্মক বক্তব্য গবেষকের।