যৌনতা মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। যতই রাখঢাক থাকুক, সার্বিকভাবে সুস্থ জীবনের জন্যও সুখকর যৌনজীবন জরুরি। তবে শুধু যৌন সুখ নয়, শরীরের উপরও শারীরিক মিলনের প্রভাব পড়ে। গবেষণায় উঠে এসেছে সেই বিষয়ে চমকে দেওয়া তথ্য।
বেশ কয়েকদিন আগে সমাজ মাধ্যমে পুরুষদের যৌনতা এবং ঘনিষ্ঠতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে এক ফিটনেস প্রশিক্ষকের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে সাম্প্রতিক গবেষণার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গবেষণা বলছে, আপনি সপ্তাহে বা মাসে কত ঘন ঘন যৌনমিলন করেন তা আপনার দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। একইসঙ্গে গোপনাঙ্গের স্বাস্থ্য তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যা হল সঠিক রক্ত প্রবাহ, ব্যালেন্সড হরমোন এবং তীক্ষ্ণ স্নায়ুর কার্যকারিতা। স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো বিপাকীয় সমস্যাগুলি তিনটি বিষয়কেই ব্যাহত করে। আর এই কারণেই ইরেক্টাইল ডিসফাংশন অনেক সময়ে হৃদরোগের প্রাথমিক ইঙ্গিত বহন করে।
আরও পড়ুনঃ সঙ্গমের সময় নেতিয়ে পড়েন? চেয়েও কিছু পারেন না? পুরুষদের তেজি ঘোড়ার মতো শক্তি দেবে এই ১০ খাবার
গবেষকদের মতে, যাঁরা মাসে মাসে একবার যৌনমিলন করেন তাঁদের হৃদরোগের ঝুঁকি সপ্তাহে ২-৩ বার যৌনমিলনকারীদের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, যারা ঘন ঘন বীর্যপাত করেন না তাঁদের তুলনায় যারা মাসে ২১ বার বা তার বেশি বীর্যপাত করেন তাদের প্রস্টেট ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কম। সেক্ষেত্রে যদি আপনার যৌন ইচ্ছা বা ক্ষমতা না থাকে, তাহলে ওষুধ খাওয়া নয়, বরং সুস্থ জীবনযাপনের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তবে এনিয়ে মতভেদও রয়েছে। গবেষকদের একাংশের মত, ঘন ঘন যৌনমিলনের সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকি কম হওয়ার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু তা সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আসলে সঙ্গম করার সময়ে শরীরে রক্ত প্রবাহ এবং অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ে। এতে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
২০১০ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা মাসে একবার বা তার কম যৌনমিলন করেন, তাঁদের তুলনায় যারা সপ্তাহে কমপক্ষে দু’বার যৌনমিলন করেন তাঁদের হৃদরোগের ঝুঁকি কিছুটা কম হতে পারে। তবে এই পার্থক্যের হিসেব খুব বেশি নয়। একইসঙ্গে হৃদরোগের একাধিক কারণের মধ্যে যৌন কার্যকলাপ একটি কারণ বটে। তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়।
গবেষণা বলছে, যৌনতা এক ধরণের ব্যায়াম হতে পারে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আর এই দুটি বিষয় হার্টের জন্য উপকারী হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার হৃদরোগের লক্ষণ বুঝলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
