সন্তান প্রতিপালনের প্রতিটি ধাপই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই নতুন বাবা-মায়েরা শিশুকে নিয়ে যে কোনও বিষয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন। শুধু সময় মতো খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো কিংবা স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা নয়, শিশুর আরও নানা খুঁটিনাটি ক্ষেত্রে নজর দেওয়া জরুরি। যা সন্তানের সার্বিক বিকাশে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখে। অনেক বাবা-মায়ের মনে প্রশ্ন আসে, সন্তানকে কতদিন তাঁদের সঙ্গে শোওয়ানো উচিত। এর জন্য কি কোনও সঠিক বয়স আছে? কৌতূহল রয়েছে অনেক অভিভাবকেরই।
শিশু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশু কত দিন তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমাবে তার কোনও নির্দিষ্ট বয়স বা নিয়ম নেই। প্রতিটি শিশুই আলাদা এবং তাদের চাহিদাও আলাদা। তবে কিছু সাধারণ নির্দেশিকা রয়েছে যা বাবা-মা-কে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে। এবিষয়ে বয়স অনুযায়ী কী কী করা উচিত জেনে নিন-
১ বছর পর্যন্তঃ এই বয়সে শিশুদের সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা এবং তত্ত্বাবধানের প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের এক বছর বয়স পর্যন্ত তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে একই ঘরে ঘুমানো উচিত। এতে রাতে শিশুর সঠিক যত্নের অবহেলা হয় না।
১-৩ বছরঃ ১ থেকে ৩ বছর বয়সি শিশুরা আবেগগতভাবে খুব বেশি বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে। রাতে মাঝে মাঝে ভয় পেতে পারে অথবা জেগে উঠতে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে তাদের বাবা-মায়ের উপস্থিতি আশ্বস্ত করে। তাই এই বয়সেও শিশুকে বাবা-মায়ের ঘরে ঘুমাতে দেওয়াই উচিত।
৩-৬ বছরঃ শিশু বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি একটি পরিবর্তনের সময়। শিশুরা ধীরে ধীরে তাদের পরিচয় এবং স্থান বুঝতে শুরু করে। এই সময়ে বাবা-মায়ের সন্তানকে তার নিজস্ব পৃথক বিছানা বা ঘরের জন্য ধীরে ধীরে প্রস্তুত করতে শুরু করা উচিত। তবে এই পরিবর্তনটিতে কোনও তাড়াহুড়ো করলে চলবে না।
৬ বছর এবং তার বেশিঃ যদি শিশু প্রস্তুত থাকে এবং বাবা-মা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাহলে ছয় বছর বয়সের পর শিশুকে আলাদা ঘরে ঘুমাতে দেওয়া ঠিক সিদ্ধান্ত। এই বয়স বোধগম্যতা এবং স্বাধীনতা বিকাশে সাহায্য করে। তবে মনে রাখবেন, প্রতিটি শিশুই আলাদা, তাই কেবল সামাজিক চাপের উপর ভিত্তি করে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুর বাবা-মায়ের থেকে আলাদাভাবে ঘুমানো একটি স্বাভাবিক এবং আরামদায়ক পদক্ষেপ হওয়া উচিত, জোর করে নয়। যদি শিশুটি ভয় পায়, কাঁদে, অথবা বারবার বাবা-মায়ের কাছে ছুটে যায়, তাহলে তাদের আরও কিছুটা সময় দেওয়া জরুরি। এর অর্থ হল কখন শিশুকে আলাদাভাবে ঘুমাতে দেওয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত বাবা-মা এবং শিশু উভয়ের অনুভূতির কথা মাথায় রেখে নেওয়া প্রয়োজন।
