আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া ঘিরে রাজ্যে রাজ্যে হুলস্থুল কাণ্ড। বাংলা, বিহার, মধ্যপ্রদেশের পাশাপাশি এবার কেরলেও বিএলওদের অসুস্থতা ও আত্মহত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে। কাজের চাপে এক বিএলও আত্মঘাতী হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই আরও এক বিএলও আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি লিখলেন। তাঁর দাবি, তিনি আত্মঘাতী হলে, নির্বাচন কমিশন, এসআইআর প্রক্রিয়াই দায়ী থাকবে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দিন কয়েক আগেই কেরলের কন্নুর জেলায় এক বিএলও মানসিক চাপে আত্মঘাতী হন। এবার কোট্টায়াম জেলায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি লিখলেন এক বিএলও। পুঞ্জার বিধানসভা এলাকায় ১১০ নম্বর বুথে বিএলও হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন অ্যান্থনি নামের এক যুবক। বিএলওদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছেন, অতিরিক্ত কাজের চাপে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তিনি।
অ্যান্থনি জানিয়েছেন, ইন্টারনেটের সমস্যার কারণে কাজের গতি বাড়াতেও পারছেন না। এক সপ্তাহ ধরে ফর্ম পৌঁছে দিয়েছেন বাড়ি বাড়ি। অধিকাংশ ফর্ম অর্ধেকের বেশি পূরণ করা নেই। আবারও সমস্ত তথ্য জোগাড় করে তাঁকে ফর্ম পূরণ করতে হবে। অতিরিক্ত কাজের চাপে শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এই কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এসআইআর-এর কাজ থেকে তাঁকে মুক্তি না দিলে, বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হবেন হুমকি দিয়েছেন তিনি। যা ঘিরে আবারও শোরগোল গোটা রাজ্যে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশে একাধিক বিএলও-র মৃত্যু হয়েছে। এসআইআর-এর কাজে ক্রমেই বাড়ছে চাপ। কাজের চাপে মানসিকভাবেও বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছেন অনেকে। এবার মধ্যপ্রদেশে বিএলওদের মৃত্যুমিছিল। শনিবার কমপক্ষে দু'জন বিএলও-র মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে এই রাজ্যেই।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, রাইসেন এবং দামোহ জেলায় কর্মরত ছিলেন রমাকান্ত পাণ্ডে এবং সীতারাম গন্ড। রমাকান্ত পেশায় ছিলেন একজন শিক্ষক ছিলেন। সুলতানপুর এলাকায় একটি স্কুলে কর্মরত ছিলেন তিনি। মন্দিদীপ এলাকায় বিএলও হিসাবে তিনি দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। গত শুক্রবার রাতে আচমকা তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর মধ্যরাতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, এসআইএর-এর কাজ নিয়ে প্রবল চাপে ছিলেন তিনি। এর জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে রানজ্রা গ্রামের বিএলও হিসাবেও তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন পেশায় শিক্ষক সীতারাম। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এনুমারেশন ফর্ম ভরার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। শুক্রবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই কাজের চাপে ধকল আর সহ্য করতে পারছিলেন না। তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে সীতারামের।
দিন কয়েক আগেই মধ্যপ্রদেশের আরও এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। বিএলও হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন ভুবন সিং চৌহান নামের এক শিক্ষক। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ সাসপেন্ড করা হয়েছিল তাঁকে। এর জেরেই মানসিক চাপে, হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। অন্যদিকে চলতি মাসেই দাতিয়া জেলায় কাজের চাপে বিধ্বস্ত হয়ে আত্মঘাতী হন এক বিএলও।
