আজকাল ওয়েবডেস্ক: এসআইআর আতঙ্কে ফের আত্মঘাতী হলেন মুর্শিদাবাদ জেলার এক বাসিন্দা। ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের জন্য বিএলও - কে দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় নথি না থাকার আতঙ্কে রবিবার রাতে এক বোতল অ্যাসিড খেয়ে নেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা থানার অন্তর্গত মহুলা এলাকার বাসিন্দা কমল নন্দী (৫২) । গুরুতরে অসুস্থ অবস্থায় ওইদিন রাতেই তাঁকে  মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়।  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন সোমবার সকালে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

প্রসঙ্গত এসআইআর প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর  থেকে নাম বাদ যেতে পারে এই আতঙ্কে ইতিমধ্যে কান্দি ,বহরমপুর এবং বেলডাঙ্গায় তিন ব্যক্তি  আত্মহত্যা করেছেন। আজকের এই মৃত্যুর ঘটনা যুক্ত করলে এসআইআর আতঙ্কে মুর্শিদাবাদে মোট চারজন আত্মঘাতী হলেন। এর পাশাপাশি আরও দু'জনে এসআইআর আতঙ্কে  হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে বিহারের বাসিন্দা  কমল নন্দী প্রায় ৩০ বছর আগে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা এলাকায়  চলে আসেন। তাঁর বাবা-মা বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করতেন। সেই কারণে কমল নন্দীর বাবা-মার নাম কোথাও ভোটার লিস্টে নেই এবং তাঁদের পুরনো কোনও নথিও কমলবাবুর কাছে ছিল না। 
মৃত ওই ব্যক্তির এক আত্মীয় সদানন্দ নন্দী বলেন, "কমলবাবু যখন খুব ছোট ছিলেন সেই সময় তাঁর বাবা-মা মারা যান।  তারপরে কোনও কারণে কমলবাবু মুর্শিদাবাদ জেলায় চলে আসেন। দীর্ঘদিন ধরে কমলবাবুর সঙ্গে বিহারে তাঁর আত্মীয়দের কোনও যোগাযোগ নেই।  এসআইআর শুরু হওয়ার পর কমলবাবু বহুবার নিজের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন কোনও যোগাযোগ না থাকার কারণে কেউই কমলবাবুকে চিনতে পারেননি এবং তাঁকে কোনওরকম নথি দিয়েও কেউ সাহায্য করেনি।''
 
তিনি বলেন ,''এসআইআর শুরু হওয়ার পর থেকে কমলবাবু প্রচন্ড আতঙ্কে থাকতেন। তিনি বহুবার আমাকে বলেছিলেন এসআইআর-এর কাজ শেষ হলে তাঁর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে এবং তাঁকে হয়ত এই দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। আমাদের সন্দেহ এই আতঙ্ক থেকেই রবিবার রাতে নিজের ঘরে রাখা অ্যাসিড খেয়ে নেন কমলবাবু। ঘটনাটি আমরা জানতে পারার পরই তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসে ভর্তি করেছিলাম।  সেখানে আজ সকালে তার মৃত্যু হয়েছে।''