মুখে দুর্গন্ধ এমনই এক সমস্যা যা অনেক সময় লজ্জায় ফেলে। অনেক সময় নিয়মিত ব্রাশ করে বা দামি মাউথ ফ্রেশনার ব্যবহার করেও এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে না। সকলের সামনে মুখ খোলাই দুষ্কর হয়ে ওঠে। তবে কিছু খাবার পাতে রাখলে এই অসুবিধা পুরোপুরি নির্মূল করা যেতে পারে। সেগুলি কী জেনে নেওয়া যাক।
আমাদের জীবনযাত্রা মুখের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা যা খাই তা মুখের দুর্গন্ধকে আরও কমিয়ে বা বাড়িয়ে তুলতে পারে। অনেক খাবার মুখের দুর্গন্ধ নিরাময়ে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। সেগুলির অনেক উপকারিতা এবং উচ্চ পুষ্টিগুণ।
মুখে দুর্গন্ধ থাকলে দই আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি বিভিন্ন উপায়ে মুখের দুর্গন্ধের সঙ্গে লড়াই করে। দই এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত দ্রব্য ভিটামিন ডি-তে সমৃদ্ধ, যা শরীরে জীবাণুর বিকাশকে ধীর করে দেয়। ভাল ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ প্রোবায়োটিক দই খেলে পেটও অনেক ক্ষণ ভরা থাকবে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, তুলসীর প্রাকৃতিক অণু, পলিফেনল, মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কার্যকর। তুলসীতেও প্রচুর পরিমাণে ক্লোরোফিল থাকে। সবুজ শাকসবজিতে ক্লোরোফিল পাওয়া যেতে পারে। এটি মুখের দুর্গন্ধ যদিও সম্পূর্ণরূপে দূর করে না, ক্লোরোফিল তা কিছুটা হলেও কমাতে সাহায্য করে।
চা কেবল পানীয় নয়, মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা অপরিসীম। কালো এবং সবুজ চা উভয়েরই অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। চায়ে পাওয়া পলিফেনল সালফার যৌগ হ্রাস করে মুখের দুর্গন্ধ কমায়।
ভিটামিন সি নানা রোগ সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। মুখের দুর্গন্ধ নাশেও এটি অব্যর্থ। সাইট্রাস ফল, তরমুজ এবং অন্যান্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার জিঞ্জিভাইটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা হ্যালিটোসিসের পাশাপাশি অন্যান্য দাঁতের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
দার মধ্যে থাকা 6-জিঞ্জেরল নামক একটি উপাদান লালা জাতীয় এনজাইমকে সক্রিয় করে, যা মুখের সালফার যৌগগুলিকে ভাঙতে সাহায্য করে। বাড়িতে দ্রুত মাউথওয়াশের জন্য গরম জল, তাজা লেবুর রস এবং গুঁড়ো আদা মিশিয়ে ব্যবহার করতে দেখতে পারেন। তাজা এবং প্রক্রিয়াজাত, দু’ধরনের আদাই কার্যকর। তবে তাজা আদাই ভাল। চিবানোর জন্য আধা ইঞ্চির এক টুকরো যথেষ্ট।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য সবচেয়ে সুপরিচিত প্রতিকারগুলির মধ্যে একটি হল পার্সলে। দারুচিনি এবং পুদিনা পাতাও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এলাচ, ট্যারাগন, ইউক্যালিপটাস, রোজমেরি এবং ধনেপাতাও কোনও অংশে কম নয়।
মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধে ক্ষেত্রে চেরিও কার্যকর। এতে রাসায়নিক পদার্থ মিথাইল মারক্যাপ্টান দূর করে। চেরি জিভে মিথাইল মারক্যাপ্টানের পচা বাঁধাকপির মতো স্বাদটি দূর করে, যা মুখকে আরও সতেজ করে তোলে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং ভিটামিন সি থাকে।
ডার্ক চকলেট সেবন মুখের জীবাণু কমায় এবং প্লাক জমা হওয়া রোধ করে। এটি দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করে। এতে CBH নামক পদার্থ দাঁতের ক্ষয় রোধ করে বলে প্রমাণিত হয়েছে। কাকাওতে প্রাকৃতিকভাবে CBH থাকে, তবে যখন এটি চকলেট তৈরির জন্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়, তখন এর ঘনত্ব হ্রাস পায়।
