শীত আসতে না আসতেই চুলের অবস্থা খারাপ? ঠান্ডা, উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করলেই ফি বছর চুল রুক্ষ হয়ে জট পেকে যায়? ঘনঘন শ্যাম্পু বা তেল লাগিয়েও কাজের কাজ হচ্ছে না? তাহলে জেনে নিন এই শীতে রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে সিল্কি স্মুদ চুল পেতে কী করবেন। কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন জেনে নিন।
কিন্তু চুলের যত্ন নেওয়া, রুক্ষ চুলকে ম্যানেজ করার পদ্ধতি জানার আগে জেনে নিন কেন চুল রুক্ষ হয়? কেনই বা অতিরিক্ত চুল ওঠে? প্রথমত অতিরিক্ত হেয়ার স্ট্রেটনার, কার্লার, ব্লো ড্রায়ার ব্যবহার করলে চুলের হাল খারাপ হয়। এছাড়াও যদি খুব ঘনঘন চুলে রং করান বা রিবন্ডিং, স্মুদনিং, স্ট্রেটনিং করান তাহলেও চুল রুক্ষ হতে পারে। এত বেশি রাসায়নিকের ব্যবহার চুলের জন্য খারাপ। অতিরিক্ত ধুলো দূষণ, সূর্যের তাপ, বা আর্দ্রতাও চুলের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। যদি আপনি সালফেট বা অ্যালকোহল যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, তাহলে সেই খারের জন্যও আপনার চুলের দফারফা হতে পারে। আর সঠিক খাবার বা জল না খেলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক কী করলে রুক্ষভাব দূর হয়ে চুল নরম হবে। সিল্কি লুক পাবেন।
শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার: সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার করা জরুরি চুল ভাল রাখতে চাইলে। তাই সালফেট এবং প্যারাবেন মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। কন্ডিশনারও তাই। সালফেট যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে সেটা চুলের স্বাভাবিক তৈলাক্তভাবকে দূর করে রুক্ষ এবং নির্জীব করে দেয়। তাই সালফেট এবং প্যারাবেন মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করার পাশাপাশি এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যাতে আর্গান অয়েল, শিয়া বাটার, গ্লিসারিন, ইত্যাদি রয়েছে। এগুলো চুলকে পুষ্টি জোগায়, ময়েশ্চার লক করে রাখে চুলে। শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। যদি সম্ভব হয় সপ্তাহে এক বা দুবার ডিপ কন্ডিশনিং মাস্ক ব্যবহার করুন।
হিট স্টাইলিং: অতিরিক্ত হিট ব্যবহার করবেন না চুলে। মানে কথায় কথায়, বা রোজ হেয়ার স্ট্রেটনার, কার্লার ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। এতে চুলের প্রোটিন নষ্ট হয়, চুল আরও দুর্বল হয়ে রুক্ষ হয়ে যায়। যার কারণে যেমন চুল ওঠে, তেমনই জট পাকায়। প্রয়োজনে কখনও এগুলো ব্যবহার করলে আগে হিট প্রটেকট্যান্ট স্প্রে ব্যবহার করবেন।
তেল মালিশ: সপ্তাহে অন্তত এক বা দুদিন তেল মালিশ করুন চুলে। এতে চুল শুক্ত হয়, হারানো ময়েশ্চার ফিরে পায়, উজ্জ্বলতা ফেরে। নারকেল তেল দিয়ে চুল মালিশ করতে পারেন। এতে চুলের প্রোটিন কমে যাওয়া আটকায়। আর্গান তেল দিয়ে চুল ম্যাসাজ করলে তাতে থাকা ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি অ্যাসিড রুক্ষতা দূর করে। উজ্জ্বলতা আনে। অলিভ অয়েল ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে মেরামত করতে সাহায্য করে। ক্যাস্টর অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। এটা চুলের গোড়াকে শক্ত করে।
অতিরিক্ত শ্যাম্পু করা: রোজ শ্যাম্পু করার অভ্যাস থাকলে সেটা ত্যাগ করুন। অতিরিক্ত শ্যাম্পুর ব্যবহার চুলের স্বাভাবিক তৈলাক্তভাব দূর করে তাকে রুক্ষ বানায়। তাই সপ্তাহে ২ থেকে বড় জোর ৩ বার শ্যাম্পু করবেন। গরম জলের বদলে হালকা গরম বা ঠান্ডা জলেই চুল ধুন।
তোয়ালে: গামছা বা রুক্ষ তোয়ালে দিয়ে চুল মোছা বন্ধ করুন। মাইক্রোফাইবারের তোয়ালে বা কটনের কোনও জামা দিয়ে চুল মুছুন। এতে চুল কম ওঠে।
লিভ ইন কন্ডিশনার: লিভ ইন কন্ডিশনার বা হেয়ার সিরাম ব্যবহার করুন চুল মোছার পর। এর ব্যবহার চুলকে একটা কোটিং দেয়, যা আর্দ্রতা থেকে চুলকে বাঁচায়, রুক্ষ হতে দেয় না।
ঘুমানোর সময় যত্ন: রাতে ঘুমানোর সময় বালিশের সঙ্গে অনবরত আপনার চুল ঘষা খেয়েও উঠে পারে। তাই সিল্ক বা স্যাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করুন।
সঠিক খাবার: প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। এছাড়া ওমেগা ৩, ফ্যাটি অ্যাসিড, বায়োটিন, আয়রন, ইত্যাদি আছে এমন খাবার খান রোজ, যেমন মাছ, মাংস, ডিম, পালং শাক। এতে ভিতর থেকে আপনি পুষ্টি পাবেন।
চুল কাটা: ঘন লম্বা চুল সকলের পছন্দের। কিন্তু তাও নিয়মিত অল্প হলেও চুল কাটা প্রয়োজনীয়। এতে স্প্লিট এন্ডস, ইত্যাদির সমস্যা দূর হয়। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল লাগে।
