আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের বিশ্বমঞ্চে প্রমাণিত পাকিস্তানের মিথ্যাচার। সম্প্রতি পাক সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছিল যে, চলতি বছর মে মাসে সংঘাতের সময় পাক বাহিনী ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধবংস করেছে। ইসলামাবাদ আগেও এই দাবি করেছিল, যাতে মদত ছিল চীনেরও। তবে, এবার ফরাসী নৌ বাহিনী পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমের দাবি উড়িয়ে দিল। রাফাল জেট ধ্বংস নিয়ে পাক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলিকে 'ভুল তথ্য' বলে অবিহিত করেছে ফরাসী নৌ বাহিনী। 

পাকিস্তানের জিও টিভি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, ফরাসী কমান্ডার ক্যাপ্টেন জ্যাকিস লৌনে অপারেশন সিঁদুরের সময় আকাশপথে পাকিস্তানের আধিপত্য নিশ্চিত করেছেন। এটি আরও দাবি করেছে যে, পাকিস্তান বিমান বাহিনী "আরও ভালভাবে প্রস্তুত" ছিল এবং রাফাল যুদ্ধবিমানটি চীনা জে-১০সি যুদ্ধবিমানের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের কারণে ধ্বংস হয়েছে।

পাক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনকে 'ভুয়ো খবর' বলে অভিহিত করেছে ফরাসী নৌ বাহিনী। বলা হয়েছে, "প্রতিবেদনে ক্যাপ্টেন লৌনকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। যিনি রাফাল নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কখনও কোনও ধরনের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মতি দেননি। প্রতিবেদনটিতে ব্যাপক ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তি রয়েছে।"

এই ঘটনা অনলাইনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে- পাকিস্তানি মিডিয়ায় ভারত-বিরোধী প্রচারের নিন্দা করেছেন।

বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এই ঘটনাটিকে পাকিস্তানের "মরিয়া ভুল তথ্য প্রচারের" প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছেন। এক্সে তিনি লিখেছেন, 'ফরাসি নৌবাহিনী পাকিস্তানের জিও টিভি এবং তার সংবাদদাতা হামিদ মীরকে "ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তি" ছড়ানোর জন্য দোষারোপ করেছে। তাঁর প্রতিবেদনে, হামিদ মীর রাফাল এবং তথাকথিত মে সংঘাত সম্পর্কে একই পুরানো ভুল ধারনার প্রচার করেছিলেন এবং এখন প্রকাশ্যে তা মিথ্যা বলে প্রকাশ পেয়েছে। যখন বিদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের প্রচারণাকে খণ্ডন করতে শুরু করে, তখন আপনি জানেন যে পাকিস্তানের ভুল তথ্য প্রচারণার যন্ত্রাংশ কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে।'

আরও অনেকে একইভাবে পাকিস্তানি মিডিয়ার সমালোচনা করে অভিযোগ করেন যে, ইসলামাবাদ ও পাক সংবাদ মাধ্যমের ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার এবং ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন দাবি করার ইতিহাস রয়েছে।

চলতি বছর মে মাসে, ভারত পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়ায় অপারেশন সিঁদুর নামে একটি দ্রুত সামরিক অভিযান চালায়। এই অভিযান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে বড় আঘাত ছিল। এর ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে, ইসলামাবাদের অনুরোধে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল।

ফ্রান্সে তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান ভারত ব্যবহার করে থাকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনা সংঘাতেও ওই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা ভারতের একাধিক যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। এমনকী, রাফাল ধ্বংস করা হয়েছে বলেও বার বার দাবি করেছে তারা। ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর প্রধান অনিল চৌহান একটি সাক্ষাৎকারে মেনে নিয়েছিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু কতগুলি, বা আদৌ তা রাফাল কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

মার্কিন রিপোর্ট অনুযায়ী, রাফালের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর জন্য চিন সমাজমাধ্যমে কতগুলি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। তার মাধ্যমে এআই সহায়তায় তৈরি একাধিক ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। দেখানো হয়, চিনের অস্ত্রে ফরাসী যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে সবই 'ভুয়ো' বলে দাবি করে আমেরিকার রিপোর্ট।