আজকাল ওয়েবডেস্ক: গরম পড়লেই এক অদ্ভুত অস্বস্তি চেপে বসে শরীরে। রোদ, হাঁসফাঁস করা ভিড়, বাসে-ট্রেনে ঠাসাঠাসি ভিড়ে সবচেয়ে বিব্রত করে যা—তা হল ঘামের গন্ধ। শুধু নিজের নয়, পাশের জনের ঘামেও ঘ্রাণবিভ্রাট তৈরি হয়। কিন্তু সত্যিটা হল, ঘাম আদতে গন্ধহীন। সমস্যা শুরু হয় যখন শরীরের ঘাম ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে বিক্রিয়া ঘটায়। আর তখনই চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে সেই অস্বস্তিকর গন্ধ।

অনেকে ডিওডোরেন্ট, পারফিউমে আস্থা রাখেন। কিন্তু এগুলোর অধিকাংশই ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে তৈরি। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে অ্যালার্জি  উঠে যেতে পারে। তাই ঘামের গন্ধের মোকাবিলায় ভরসা রাখুন ঘরোয়া টোটকায়। কেমন টোটকা? চলুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

প্রথমেই বলা যাক লেবুর কথা। লেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া দূর করতে দারুণ কার্যকর। স্নানের আগে বা ঘুমোনোর আগে, একটা লেবু কেটে বহুমূলে ঘষে দিন কয়েক মিনিট। নিয়ম করে করলেই মিলবে ফল।

দ্বিতীয় টোটকা—বেকিং সোডা আর কর্নফ্লাওয়ার। শুনতে রান্নাঘরের উপাদান মনে হলেও, এই দুইয়ের মিশ্রণ কিন্তু প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্টের মতো কাজ করে। বেকিং সোডা শরীরের অতিরিক্ত ঘাম শোষণ করে আর কর্নফ্লাওয়ার ব্যাকটেরিয়ার জন্ম আটকায়। শুকনো পাউডার বানিয়ে দিনে একবার ব্যবহার করলেই হবে।

তৃতীয় টোটকায় রয়েছে আপেল সিডার ভিনিগার। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ, যা ঘামের দুর্গন্ধ কমাতে দারুণ কার্যকর। এক টুকরো তুলোয় ভিনিগার ভিজিয়ে নিন, তারপর হালকা করে আন্ডারআর্মে মাখুন। চাইলে এর সঙ্গে জল মিশিয়ে স্প্রে বোতলেও ভরে রাখতে পারেন।

এর পরে আসে নারকেল তেল আর টি ট্রি অয়েল। নারকেল তেল ত্বকের যত্নে এমনিতেই সুপরিচিত। আর টি ট্রি অয়েল? জীবাণুনাশক হিসেবে তার জুড়ি মেলা ভার। দু’চামচ নারকেল তেলে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে বহুমূলে মাখলেই দিনভর স্বস্তি।

শেষ টোটকাটি শরীরের বাইরের নয়, ভেতরের যত্নে। কী খাচ্ছেন, তাতেও কিন্তু ঘামের গন্ধের তারতম্য ঘটে। রসুন, পেঁয়াজ, অতিরিক্ত মসলা বা ক্যাফেইনযুক্ত খাবার শরীরে দুর্গন্ধ বাড়াতে পারে। তাই পাতে রাখুন টাটকা ফল, শাকসবজি, আর প্রচুর জল। ভিতর পরিষ্কার থাকলে, বাইরেও তার ছাপ পড়ে।

সুতরাং, ঘামের গন্ধ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। হাতের কাছেই আছে ঘরোয়া উপায়। শুধু নিয়ম করে মানলেই নিজেকে রাখা যাবে সতেজ, ঝরঝরে—আর গন্ধমুক্ত।